শিল্পাঞ্চল খ্যাত ময়মনসিংহের ভালুকায় জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ৯ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১১ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রতিও। পুরো রমজান মাস ছিল নির্বাচনের মাস। এ মাসে বিভিন্ন ইফতার পার্টিতে প্রার্থীদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে উপহারসামগ্রীও প্রদান করেছেন ভোটার ও নিজ নিজ কর্মীদের মাঝে। ভোটের আলোচনা এখন মহল্লার চায়ের দোকান থেকে অফিস পাড়ায়। কে হবেন শিল্পসমৃদ্ধ ভালুকার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কে হবেন ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এ নিয়ে চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা। তবে দলীয় প্রতীক না থাকলেও নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এমনটাই আশা সাধারণ ভোটারদের।

একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ভালুকা উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৯৯৫ জন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে ভালুকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হাজি রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও টানা দুইবারের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ কামরুজ্জামান পিন্টু, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিন ও আমেরিকান স্কুল অ্যান্ড কলেজের চেয়ারম্যান বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান সোহেল আকন্দ, শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী প্রিন্সিপাল দেওয়ান ফেরদৌসুর রহমান ও জাতীয় শ্রমিক লীগ ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় আছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজাদুল হক পারুল, জাতীয় শ্রমিক লীগ ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হোসাইন মো. রাজিব, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি তানভীর আহমেদ খান, উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি আবুল হোসেন খোকন, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম আফরোজ্জামান সোহেল, সাবেক ছাত্রনেতা হুমায়ূন আহমেদ হিমু ও বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ খন্দকার মওদুদ আহমেদ আপেল। এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার প্রয়াত মফিজুর রহমানের মেয়ে মাহমুদা সুলতানা মুন্নি, ময়মনসিংহ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার ও ভালুকা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলি আক্তার।

ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসাইন মো. রাজিব জানান, নির্বাচিত হলে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ভালুকাকে সম্পৃক্ত করে শিল্পবান্ধব আধুনিক ভালুকা গঠনে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন।

সাধারণ ভোটার ও পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রতীক না থাকলেও চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থীই আওয়ামী লীগের। বিএনপি নির্বাচনে না আশায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নিজেদের মধ্যেই। নির্বাচনে না আসলেও বিএনপি সমর্থিত তৃণমূলের ভোট চেয়ারম্যান পদে বিজয়ে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যহীন ভালুকা গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন এমন একজনকেই চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে চান সাধারণ ভোটাররা।

শিক্ষক ও সমাজকর্মী শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা এমন একজনকেই চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করতে চাই যিনি সৎ, যোগ্য ও ন্যায়পরায়ন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাসযোগ্য শিল্প সমৃদ্ধ ভালুকা গঠনে তিনি দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করবেন।

ভালুকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি কামরুজ্জামান মানিক বলেন, আমরা তাকেই নির্বাচিত করতে চাই, যিনি কথায় নয় কাজে সৎ ও ন্যায় পরায়ন হবেন। ভালুকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি দূষণ মুক্ত, পরিবেশ ও শিল্পবান্ধব ভালুকা গঠনে কাজ করবেন। উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে উপজেলা পরিষদ গঠন হলে ভালুকা উপজেলা পরিষদের প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচত হোন জুলহাস উদ্দিন তালুকদার, পরে যথাক্রমে পরে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন এবং দায়িত্বপালন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর আফসার উদ্দিন আহমেদ, কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু, গোলাম মোস্তফা ও বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবুল কালাম আজাদ।

"