সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৩ এপ্রিল, ২০২৪

চট্টগ্রাম

সীতাকুণ্ডে গাছ সাবাড় পাহাড় কেটে রাস্তা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের পাহাড়ি টিলায় অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে গাছ। তাছাড়া এই স্থানে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান পিএইচপি কর্তৃপক্ষের দিকে। অবৈধভাবে পাহাড় কেটে তৈরি করা রাস্তা দিয়ে নিয়মিত প্রতি রাতে পাচার হচ্ছে বিভিন্ন গাছের গুঁড়ি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে অনুমতি ছাড়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে পাহারা বসিয়ে অনুমতি ছাড়া ১৫ দিন পর্যন্ত দিনরাত পাহাড়ের গাছ কেটে সাবাড় করে চলছে এই প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠানটি। সংঘবদ্ধ একটি চক্র বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এ কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলার পূর্বে পাহাড়ি বন ও পশ্চিমে সাগর পাড়ে কেওড়া বন প্রায় সব এখন বন খেকোদের কুনজরে ধ্বংস হচ্ছে। এতে করে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে। দেখা দিয়েছে অনাবৃষ্টি। তেমনিভাবে বনখেকোদের কুনজরে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মকবুল রহমান জুটমিল লিমিটেডের বাংলো সংলগ্ন এলাকা থেকে আনোয়ারা জুট মিলস লিমিটেড এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড়ি টিলার গাছ কেটে সে গাছ পাচারের জন্য পুনরায় পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছেন প্রভাবশালী এই প্রতিষ্ঠানটি।

গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাঙামাটি থেকে ভাড়া করে আনা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন যুবকের একটি দল করাত ও কুড়াল দিয়ে এই গাছগুলো কেটে টুকরো করার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ১০-১২ জনের একটি গ্রুপ রাস্তা তৈরির কাজ করছে। এ সময় দেখা যায়, পাহাড়ি টিলার শত শত ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির বনজ ও ঔষধি গাছগুলো কেটে পাচার করা হয়েছে। ওই সময় গাছ কাটায় নিযুক্ত শ্রমিক জয় মার্মা ও অমাতিক মার্মাসহ অনেককে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, গাছগুলো রাঙামাটির ঠিকাদার মোহাম্মদ শাহ আলম পিএইচপির থেকে কিনে নিয়েছে। আমাদের রাঙামাটি ও রাগুনিয়া থেকে কাজ করানোর জন্য চুক্তি করে এনেছে। আমাদের দিনে ৯০০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। আমাদের কাজ গাছ কেটে ছোট করে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া। এর বাহিরে আমরা আর কিছু বলতে পারি না।

এ বিষয়ে ইউনিয়েন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজী গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, জায়গাটি পিএইচপির ক্রয়কৃত। গাছগুলোও তাদের লাগানো। এ বিষয়ে পিএইচপির ল্যান্ড কর্মকর্তা আমির হোসেন গাছকাটার কথা স্বীকার করে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সব দপ্তরের অনুমতি নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পাহাড়ে লাগানো গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছগুলো কেটে সেখানে ফলজ বাগান করা হবে। তবে পাহাড় কাটা হচ্ছে না পাহাড়ে উঠার জন্য সমতল করা হচ্ছে শুধু।

জানতে চাইলে (বন বিভাগ) কুমিরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, জায়গাটি পিএইচপির লিমিটেডের মালিকানাধীন অনুমতিক্রমে তারা গাছগুলো কাটছেন। রাস্তা তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, জায়গাটি যেহেতু তাদের গাছগুলো কেটে নামাতে রাস্তা তৈরি করতেই পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেওয়া হয়নি। পূর্বে অনুমতি নিয়েছে কিনা আমার জানা নেই তবে আমি নোটিস করে তাদের কাগজপত্র যাচাই করে দেখব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close