নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

ইভিএম সংরক্ষণ নিয়ে বেকায়দায় ইসি

আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) সংরক্ষণ করা নিয়ে চরম বেকায়দায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংরক্ষণের জায়গা ভাড়া পাওয়া নিয়ে জটিলতা থেকে এই সংকট তৈরি হয়েছে। আবার সংরক্ষণের পাশাপাশি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় কমিশন থেকে সমন্বয় না করায় বিপাকে রয়েছেন কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইভিএম সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনায় নানা অব্যবস্থাপনা উঠে আসে। কর্মকর্তাদের সমস্যা হচ্ছে, কমিশন আমলে না নেওয়ায় আরো জটিলতার উদ্ভব ঘটছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে ইভিএম অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে ইসির কাছে আবারও অনুরোধ করেছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী।

চলতি মার্চে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সমন্বয় সভায় চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত ইভিএমের জন্য গোডাউন ভাড়া না পাওয়ায় এ বিষয়ে একাধিকবার সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সংরক্ষিত ইভিএমগুলো চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আবারও অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি জানান, নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত ইভিএমগুলোর কিউসি করা হয়। কিউসি করার সময় অপারেটর এবং শ্রমিকদের জন্য অর্থ ব্যয় করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে ইভিএম প্রকল্প বা রাজস্ব খাত থেকে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। এ খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা জরুরি।

কার্যবিবরণীতে ইভিএমের প্রকল্প পরিচালক কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান তার বক্তব্যে জানান, ইভিএম শ্রমিকদের মজুরি খাতে প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ আছে। এই খাতে মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়গুলো থেকে চাহিদা পাওয়া গেলে অর্থ দেওয়া সম্ভব হবে।

জানা গেছে, নানা বিতর্কের কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার হয়নি ইভিএম। ফলে গলার কাঁটা এখন এগুলো চট্টগ্রামের ইনডোর স্টেডিয়ামে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলো দ্রুততার সঙ্গে সরানো প্রয়োজন। কারণ, ইনডোর স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ বারবার ইভিএমগুলো সরানোর জন্য বলছে স্থানীয় ইসির মাঠ অফিসকে। কর্মকর্তা বলছেন, ইভিএমের কারণে তাদের বিভিন্ন খেলাধুলায় সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণে আমাদের পক্ষ থেকে কমিশনকে বারবার ইভিএমগুলো এখান থেকে সরাতে অনুরোধ করছি। কিন্তু কাজের অগ্রগতি জিরো। তথ্য মতে, স্টেডিয়ামে ২ হাজার ৭৭৩টি ইভিএম আছে। এর মধ্যে ৫৫৫টি ইভিএম কুমিল্লায় পাঠানো হয়। বাকিগুলো এখনো চট্টগ্রামের ইনডোর স্টেডিয়ামে সংরক্ষিত আছে। স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি জেলা প্রশাসককেও বলেছেন। জেলা প্রশাসক আবার সচিবকে জানিয়েছেন, আমরাও সচিবালয়কে চিঠি দিয়েছি। এছাড়া, ইভিএমগুলো রাখতে চেষ্টা করেও আমরা সরকারি টাকায় গোডাউন ভাড়া পাইনি।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বিকল্প জায়গা বের করে ইভিএমগুলো সরানোর ব্যবস্থা করছি। বর্তমানে চট্টগ্রামের ইনডোর স্টেডিয়ামে ইভিএমগুলো রাখা হয়েছে। স্টেডিয়াম থেকে ইভিএমগুলো পাশের অঞ্চলে সরানোর জন্য একটা পরিকল্পনা করেছি।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সভায় এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে একটা ইতিবাচক নিদেশনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আশানুরুপ কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইসি চাইছে, সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন হলে ইভিএমগুলো বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ)-এ নিয়ে আসার চিন্তা রয়েছে, যা সময়সাপেক্ষ বিষয়।

সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইনডোর স্টেডিয়ামে ২৭০০ ইভিএম রাখা আছে। কিন্তু ইভিএমের জন্য গোডাইন ভাড়া করেও রাখা যাচ্ছে না। কারণ, গোডাউন ভাড়ার কোনো বরাদ্দ নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close