নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ মার্চ, ২০২৪

স্কুলছাত্র অপহরণের নেপথ্যে গাড়িচালক

দুই ভাইকে রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিলেন গাড়িচালক কামরুল। বড় ভাইকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে ছোট ভাইকে নিয়ে যান এক বন্ধুর বাসায়। সেখানে গিয়ে সাজান অপহরণের নাটক। সেই বন্ধুকে দিয়ে ফোন করান দুই ভাইয়ের বাবাকে। ছোট ছেলে জামিনুর রহমান (১১) ও গাড়িচালক কামরুলকে অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে দাবি করেন ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। ভয়ভীতি দেখিয়ে আদায় করে নেন ২০ লাখ টাকাও। পরে জামিনুরকে নিয়ে বাসায় ফেরেন চালক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, গাড়িচালকের সহযোগীকে গ্রেপ্তার ও মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় শিশু জামিনুর রহমান ও গাড়িচালক কামরুল হাসানকে (২৮) অপহরণ করা হয়েছে বলে ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর চাচা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, আমার ছোট ভাই আনিসুর রহমানের দুই ছেলে আমিনুর ও জামিনুর। গত বুধবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে ধানমন্ডি থেকে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের উদ্দেশে রওনা হয় গাড়িচালক কামরুল হাসান। সাড়ে ৭টার দিকে আমিনুরকে ধানমন্ডি ১২ রোডে মাস্টারমাইন্ড স্কুলে পৌঁছে দেওয়া হয়। পরে জামিনুরকে নিয়ে গাড়িচালক ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে রোড নম্বর ১০/এ মাস্টারমাইন্ড স্কুলের সামনে পৌঁছামাত্র অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ওই দিনই সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল করে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। নইলে শিশু ও চালককে হত্যা করা হবে বলে জানায়।

পুলিশ জানায়, পরিবারের লোকজন পুলিশকে না জানিয়ে অপহরণকারীদের কাছে ২০ লাখ টাকা পৌঁছে দেয়। পরে চালক ও তাদের সন্তান বাসায় ফিরে আসে। এর আদ্যোপান্ত জানার জন্য জামিনুর ও চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কামরুলের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে তাকে হেফাজতে রেখে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে চালক নিজেই অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

পুলিশ আরো জানায়, কামরুলের গ্রামের বাড়ি ভোলায়। ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন। ছেলেকে অপহরণ করতে পারলে একসঙ্গে অনেক টাকা পাওয়া যাবে- এই লোভে পরিকল্পনা করেছিলেন। মুক্তিপণের টাকাও নিয়েছিলেন। নিজেও অপহৃত হওয়ার অভিনয়ও করেছেন। কিন্তু একপর্যায়ে সব স্বীকার করতে বাধ্য হন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বুধবার বিকেলেই অপহরণকারীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বসিলা এলাকা থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close