কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

  ০৮ মার্চ, ২০২৪

এবার অর্ধশতাধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের টাকা গায়েব

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিদ্যুৎ অফিসের ৫০ জন গ্রাহকের কয়েক লাখ টাকা গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ব্যাংকের মঙ্গলপৈতা বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে গত বুধবার গ্রাহকরা উপজেলার মঙ্গলপৈতা বাজারে ওই ব্যাংকের কার্যালয়ে ভিড় করেন। এর আগে একই শাখা থেকে প্রবাসী এক গ্রাহকের ১৫ লাখ টাকা গায়েব করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি কালীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে বিলের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি সামনে আসে। গ্রাহকদের বিল এজেন্ট ব্যাংকে জমা নেওয়া হলেও সে টাকা বিদ্যুৎ অফিসে জমা হয়নি।

ফরিয়াদকাঠি গ্রামের আসাদ বিশ্বাসের ৪টি বিদ্যুৎ বিলে প্রায় ১০ হাজার টাকা, একই গ্রামের নাজির বিশ্বাসের ৩টি বিলে ৯ হাজার ৩০০ টাকা, মঙ্গলপৈতা গ্রামের সাধন রায়ের ৪টি বিলে ১২ হাজার ১০০ টাকা, পারখির্দ্দা গ্রামের বিল্টু হোসেনের ৪টি বিলে ১ হাজার ১৩০ টাকাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল গায়েব করা হয়েছে। গ্রাহকদের বিল এজেন্ট ব্যাংক রেভিনিউ স্ট্যাম্প দিয়ে গ্রহণ করলেও তা বিদ্যুৎ অফিস বুঝে পায়নি। ফলে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে কালীগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি মাঠে নামলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে মঙ্গলপৈতা ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওই প্রবাসীর ভাই ঝিনাইদহের আমলি ম্যাজিস্ট্রেট (কালীগঞ্জ) আদালতে মামলা করেন। মামলার নথি প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকের মঙ্গলপৈতা শাখায় বিভিন্ন সময় আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিন নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এসব ঘটনা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ওপর বারবার চাপিয়েছেন। সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির ইনচার্জ তরিকুল ইসলামকে ব্যাংকের ভেতর আটক করে জোরপূর্বক সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। এরপর থেকে ওই ইনচার্জ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ২০২৩ সালে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ রয়েছে, মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম হলেও ব্যাংটির তদারকিতে থাকা কালীগঞ্জ উপজেলা ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম নিশ্চুপ থাকেন।

বিদ্যুৎ গ্রাহক পারখির্দ্দা গ্রামের বিল্টু হোসেন বলেন, শুধু আমি না, এ অঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ মানুষের সঙ্গে একই রকম ঘটনা ঘটেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

উপজেলার মঙ্গলপৈতা বাজারের ইসলামী এজেন্ট ব্যাংকিং উদ্যোক্তা জসিম উদ্দিন বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে কিছু মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা ইসলামী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জানার পর আমাদের দুজন কর্মকর্তাকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তারা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের স্টাফদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানের স্টাফরা বলেছেন, দ্রুত গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close