নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

লালপুরে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব স্কুলে আসছে না শিক্ষার্থীরা

নাটোরের লালপুর উপজেলার আড়বাব ইউনিয়নের ঢুষপাড়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে গত ৭ দিন ধরে স্কুলে আসা বন্ধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরাতে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বোঝাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন। অপরদিকে কমিটি বাতিল চেয়ে ২৫ জানুয়ারি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন মাহাবুব আলম নামে এক অভিভাবক।

বুধবার দুপুরে ঢুষপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলছে। কোনো শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী নেই। শিক্ষকরাও বিদ্যালয়ে ছিলেন না, শুধু অফিস সহকারী বিদ্যালয়ে বসে আছেন। এ সময় কথা হয় বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী রুহুল কুদ্দুসের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্কুলের কমিটির সভাপতি নিয়ে ঝামেলায় গত ৫ দিন ধরে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না। স্যাররা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়েছেন।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করতে একটি সভা হয়। এর পরে আফজালুর রহমানের নাম অভিভাবকের সম্মতিক্রমে পাঠানো হয়। এরপর তাকে বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি করা হয়। এই এলাকার মাহাববু আলমও সভাপতি হতে চেয়েছিলেন। তার নাম বাদ পড়ায় তার এলাকার অভিভাবকদের নিষেধ করে ৭ দিন ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আসা বন্ধ করে দিয়েছে।

মোশরাফ হোসেন, রঞ্জিত সরকারসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন স্কুলে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেন। তিনি বিদ্যালয়ের ভালো চান না। নিজের সুবিধা হাসিল করতেই শিক্ষিত লোককে বাদ দিয়ে একজন অশিক্ষিত লোককে স্কুল কমিটির সভাপতি করেছেন। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই কমিটি বাতিল এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণ না করা হলে তাদের কোনো সন্তান স্কুলে যাবে না।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য আবদুস সাত্তার, আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই কমিটি বাতিল ও দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের অপসারণের জন্য পাঁচ গ্রামের মানুষ একত্র হয়েছি। কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যাবে না।’

কমিটি থেকে বাদ পড়া মাহাবুব আলম বলেন, ‘এই কমিটি বতিলের জন্য রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন ঠিকমতো স্কুলে থাকেন না। তিনি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য কাউকে না জানিয়ে ইচ্ছেমতো গোপনে অভিভাকদের থেকে উপবৃত্তি দেওয়ার কথা বলে কাগজে স্বাক্ষর করে একজন অশিক্ষিত লোককে সভাপতি করেছেন। এজন্য এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছি।’

সভাপতি আফজালুর রহমান বলেন, আমাকে এমপি সভাপতির করার জন্য ডিও লেটার দিয়েছেন। ওই এলাকার কিছু লোক এ জন্য ষড়যন্ত্র করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে দিচ্ছে না।’

এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শিউলী আহমেদ বলেন, স্কুলে একটু ঝামেলা ছিল, কিছুটা সমাধান হয়ে গেছে। স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসবে। কমিটি অনুমদন দেয় বোর্ড। কমিটি বাতিল সময়ের ব্যাপার। তবে অভিভাবকরা যদি স্কুলে শিক্ষার্থীদের না পাঠায় তাহলে শিক্ষার্থীদের লেখাপাড়ার ক্ষতি হবে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরাতে আমরা শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়েছি, তারা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারপরেও যদি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা না আসে তখন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close