বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মালিয়া মারিয়া মৌলি (১৭) রবিবার (২০ নভেম্বর) নিজ বাসার বারান্দায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার বাবা ও মা জানান, শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় বার্ষিক পরীক্ষায় তাকে গণিতে ফেল করানো হয়। এজন্য সে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে। তারা আরো জনান, পরীক্ষার রেজাল্ট পেয়ে মৌলি বাড়িতে এসে কান্নাকাটি শুরু করে। শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় তাকে ফেল করানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে। এরপরই সে আত্মহত্যা করে।

মৌলি নগরীর শের-ই বাংলা সড়কের বায়তুল মিনা ভবনের বাসিন্দা মো. মোশারেফ হোসেনের মেয়ে। মৌলির মা কোয়েল সাংবাদিকদের জানান, রবিবার দুপুর ১টায় কলেজ থেকে মৌলি বাসায় আসে। এ সময় সে মাকে জানায়, গণিত বিষয়ে সে ফেল করতে পারে না। তাকে ফেল করানো হয়েছে। এজন্য তার মন ভালো নেই। এই বলে সে নিজের ঘরে ঢোকে। পরে তার কোনো সাড়া না পেয়ে বারান্দায় গিয়ে মৌলিকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৌলির বাবা মোশারেফ হোসেন কলেজশিক্ষক। তার সংগঠন বাংলাদেশ কলেজশিক্ষক সমিতি ব?রিশা?লের সভাপতি অধ্যক্ষ মহসিন উল-ইসলাম হাবুল পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, কলেজের গণিত শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়েনি মৌলি। এ কারণে তাকে বর্ষ পরীক্ষায় গণিত বিষয়ে ফেল করানো হয়েছে। বিষয়টি মৌলি শিক্ষকের কাছে জানতে চেয়েছিল। তখন শিক্ষক তাকে কোনো কিছু বলেছে, যা সে মেনে নিতে পারেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদ বলেন, ‘প্রাইভেট না পড়ায় পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ায় এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। আমি খোঁজ নিয়েছি কেউ প্রাইভেট পড়ায় কি না। কিন্তু কেউ প্রাইভেট পড়ায় না। প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে লেখা হবে।’

তিনি আরো জানান, গত ১৪ ও ১৬ নভেম্বর কলেজে প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল কারো মনঃপূত না হলে তাদের মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। এই সুযোগ দেওয়ার পরও এটা হওয়ার কথা নয়। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ‘এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

"