নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ জানুয়ারি, ২০২০

কর্মশালায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক না হলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ছোট ছোট বর্জ্য ধীরে ধীরে পাহাড় সমান সমস্যা তৈরি করছে। এতে আমাদের সব উন্নয়ন ব্যাহত হয়ে যেতে পারে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক উপায় ও কৌশল গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে সব ধরনের বর্জ্যকে ডাম্পিং করা হয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করছে। সুতরাং সময় এসেছে এখনই সঠিক উপায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার।

গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে শহীদ মনসুর আলী সরণিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ৫৩টি পৌরসভা এবং ৮টি সিটি করপোরেশনের কঠিন ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফিজিবিলিটি স্টাডি কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জহিরুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের সিনিয়র অ্যাডভাইজার নীলিমা টোটা। এছাড়া পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর উদাহরণ দিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, উন্নত দেশগুলোতে দুই ধরনের বর্জ্য হয়ে থাকে একটি ইনঅর্গানিক আরেকটি অর্গানিক। ইন অর্গানিক যেসব বর্জ্য আছে সেগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টে দিয়ে এনার্জি উৎপাদন করা যাবে এবং অর্গানিক বর্জ্য দিয়ে জৈব সার তৈরি করা যাবে। এই ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট আমাদের দেশের পৌরসভাগুলোতেও করা হবে। তবে তার জন্য সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার সহযোগিতা দরকার। উন্নত দেশে এই ধরনের ব্যবস্থা আছে।

মন্ত্রী সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যার যা দায়িত্ব আছে আপনারা তা পালন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কিছু গাড়ি কেনার জন্য। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। গাড়িগুলো ক্রয় করে সব পৌরসভায় দিয়ে দেওয়া হবে। এ গাড়ি করে বর্জ্য ডাম্পিংয়ে নেওয়া যাতে করে পরিবেশ দূষণ না হয়। এডিস মশাসহ যেকোনো সমস্যার জন্য সবার সচেতনতা বাড়ানোর জন্য তাগিদ দিয়েছেন তিনি।’

সিলেট সিটি মেয়রের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মেয়র আরিফ একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। সেটি হলো বিভিন্ন ধরনের বর্জ্যকে বাসার ভেতর আলাদা করা হয়। আর এ কাজটি করছে বাসার গৃহকর্মীরা। বিনিময়ে তাদের কেজিপ্রতি ৫ টাকা করে দেওয়া হয়। তারা টাকার বিনিময়ে এ কাজটি করে থাকে। এতে করে সিটির লাভ হলো প্রথম বর্জ্য আর থাকে না, আর দ্বিতীয়ত ডাম্পিংয়ে গিয়ে আর আলাদা করতে হয় না। পলিথিন এবং প্লাস্টিকের বোতলগুলো আমরা বিক্রি করে দেই। এই টাকা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে লাগানো হয়।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসংখ্যা বাড়ছে। একইসঙ্গে আমাদের ইনকামও বেড়েছে। আয় বাড়ার সঙ্গে চাহিদাও বেড়েছে। ফলে বর্জ্যর উৎপাদনও বেড়েছে। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এ বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করা। আর কাজটি খুব দ্রুতই করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, আমার জন্ম কক্সবাজার শহরে। শৈশবকালে এ শহরে তেমন কোনো বর্জ্য দেখতাম না। আর এখন এই শহরে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা এবং ট্যুরিস্টরা মিলে সবাই প্রচুর বর্জ্য উৎপাদন করছে। আমাদের এখনই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে ২০৩০ এসডিজি অর্জন এবং ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশে পৌঁছানো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close