সাকিব আল মামুন, গোলাপগঞ্জ (সিলেট)

  ২৪ আগস্ট, ২০১৯

সিলেটের গোলাপগঞ্জ

মৃত ও বদলিদের নিয়ে তথ্য বাতায়ন!

মো. ফারুক আজম চৌধুরী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সাবেক পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা। তিনি গত বছরের ১১ মে মারা গেছেন। কী আশ্চার্য! মৃত্যুর এক বছর পরও স্বপদে দায়িত্বে বহাল রয়েছেন তিনি! ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে ১৫ মাস। এ সময়ের মধ্যে গোলাপগঞ্জে পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে তিনজন রদবদল হলেও উপজেলা তথ্য বাতায়নে বহাল আছে ফারুক আজম চৌধুরীর নাম। অথচ বর্তমানে গোলাপগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন রবিন্দ্র কুমার তালুকদার।

সম্প্রতি গোলাপগঞ্জ উপজেলার ওয়েবসাইট (http://www.golapganj.sylhet.gov.bd) ভিজিট করে দেখা যায়, শুধু পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা নয়, গোলাপগঞ্জ মডেল থানা, জনগুরুত্বপূর্ণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়, উপজেলা মৎস্য অফিসসহ বেশ কয়েকটি দফতরের কর্মকর্তাদের নাম নিয়ে রয়েছে ওয়েবসাইটে তথ্য বিভ্রাট। পূর্ববর্তী কিংবা তারও পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নাম্বার রয়েছে সেখানে। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের নাম-পরিচয় থাকলেও ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদের কলামে কোনো তথ্য নেই। জনগণের দোরগড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশের সব জেলা-উপজেলাকে অনলাইনের আওতায় এনেছেন। কিন্তু গোলাপগঞ্জে নামেমাত্র উপজেলার ওয়েবসাইট রয়েছে। ওয়েবসাইট হতে নম্বর সংগ্রহ করে কল দিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেক ভিজিটর। ওয়েবের আপডেট না থাকায় এমন বিড়ম্বনায় পড়ছেন বলে জানান ভিজিটররা। সংশ্লিষ্টদের এমন উদাসীনতায় ওয়েবসাইটের তথ্য বিভ্রাটে কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী।

উপজেলা প্রশাসনের খামখেয়ালিতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত আপডেট করা হয় না বলে জানা গেছে। তথ্য বাতায়নে উপজেলা প্রশাসনের এমন গাফিলতি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন সেবাবঞ্চিতরা। সম্প্রতি অনুসন্ধানে দেখা যায়, বর্তমানে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে মিজানুর রহমান দায়িত্বে থাকলেও বদলি হয়ে যাওয়া কর্মকর্তা পূর্ববর্তী ওসি এ কে এম ফজলুল হক শিবলী স্বপদে বহাল আছেন। উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার হিসেবে ফনিন্দ্র চন্দ্র সরকারের নাম ও মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়। মুঠোফোনে প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, চলতি বছরের মে মাসের শেষ সপ্তাহে বদলি হয়ে তিনি টাঙ্গাইলে কর্মরত আছেন। কিন্তু গোলাপগঞ্জে বর্তমানে এ পদে কর্মরত আছেন আহম্মেদ কবির খান। এ ছাড়া তথ্য বাতায়নে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে ডা. রেহান উদ্দিনের নাম, মোবাইল ও ছবি। অথচ তিন বছর আগেই গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি হয়েছেন তিনি। মুঠোফোনে আলাপ হলে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন ডা. তউহিদ আহমদ। এদিকে গত বছরের এপ্রিলে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান অবসরে যান। তবে ওয়েবসাইটে হাবিবুর রহমানের তথ্য রয়েছে। বর্তমানে এ পদে কর্মরত মাহমুদুল হাসান। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে হাবিবুর রহমান থাকলেও ওয়েবসাইটে আলতাফুল হক ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইদুর রহমানের পরিবর্তে রয়েছে এমদাদুল হকের নাম। এ ছাড়া সমাজসেবা অফিসার ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার কলামে কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমার অফিসের তথ্য গত সপ্তাহে আপটেড করেছি। আমার অফিস ছাড়া বাকি অফিসের তথ্য নিজ নিজ কর্মকর্তা আপডেট করার কথা। তবুও বিষয়টি আমি দেখছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close