মিজানুর রহমান, তানোর (রাজশাহী)

  ২৪ আগস্ট, ২০১৯

ভুল তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ

বাদশাকে লিগ্যাল নোটিস দিলেন ফারুক চৌধুরী

ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাকে লিগ্যাল নোটিস দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। ওমর ফারুক চৌধুরীর পক্ষে রাজশাহী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহা. এজাজুল হক মানু গত ২১ আগস্ট ফজলে হোসেন বাদশা বরাবর এ নোটিস দেন। নোটিস প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে ওমর ফারুক চৌধুরী বা অ্যাডভোকেট এজাজুল হক মানুকে লিখিতভাবে সংসদ সদস্য বাদশাকে তার বক্তব্যের স্বপক্ষে তথ্য প্রমাণসহ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে লিগ্যাল নোটিসে বলা হয়েছে। এমনকি প্রয়োজনে মানহানি ও ক্ষতিপূরণের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে নোটিসে। লিখিত জবাব প্রদানে ব্যর্থ হলে উল্লিখিত বক্তব্য আপনার বলে অনুমিত হবে।

নোটিসে বলা হয়, ‘আমার মক্কেল জনাব ওমর ফারুক চৌধুরী কর্র্র্তৃক অনুরোধপ্রাপ্ত হয়ে জানাচ্ছি, ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ নামের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় গত ১৯ আগস্ট একটি খবর ছাপা হয়। খবরটির শিরোনাম ছিল ‘খুনি ফারুক-রশীদের শিষ্যরা এখন কেউ এমপি, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ মানবাধিকার কর্মী, কেউ অন্য দলের নেতা’।

ওই খবরের এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এক সময় রাজশাহীজুড়ে দাপট ছিল ফ্রিডম পার্টির। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী এক সময় ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি ফ্রিডম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। রাজশাহী সদর আসনের এমপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা জানান, তিনিও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সে সময় ফ্রিডম পার্টির যে মিছিলটি বের হয়েছিল, তাতে সামনের সারিতে ছিলেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তারা সে সময় লাঠি নিয়ে ফ্রিডম পার্টির মিছিলকে ধাওয়া করেছিলেন। কয়েকবার ফারুক চৌধুরীকে তারা ধাওয়া করেছেন বলেও জানান বাদশা। তিনি আরো বলেন, প্রথমে ফ্রিডম পার্টি, এরপর ছাত্রদলের হয়ে বিশ^বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (রাকসু) ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন ফারুক চৌধুরী।’

নোটিসে ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর তৎপরতা সম্পর্কে লেখা এসব প্রতিবেদনের তথ্য ও ভাষাকে মিথ্যা, কাল্পনিক, অশোভন, মানহানিকর ও উদ্দেশ্যমূলক আখ্যা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘প্রকাশিত খবরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং ব্যক্তিগণ আপনার (বাদশা) বক্তব্যকে খবরের ভিত্তি হিসেবে দাঁড় করেছেন।’

নোটিসে দাবি করা হয়, ‘ওমর ফারুক চৌধুরী একজন সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। তার বাবাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তথা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি অবিচল থাকার কারণে পাকিস্তানি সেনারা তাকে নিমর্মভাবে হত্যা করে।’

নোটিসে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ওমর ফারুক চৌধুরীর আপন মামা শহীদ এ এইচ এম কামরুজ্জামান। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ এইচ এম কামারুজ্জানের স্ত্রীসহ তার পরিবার আমার মক্কেলের বাবার বাড়িতে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিকভাবে সাহায্য সহযোগিতা এবং আশ্রয় দেওয়ার কারণে স্বাধীনতাবিরোধীরা আমার মক্কেলের বাবাকে ২৫ নভেম্বর ১৯৭১ তারিখে নির্দয় ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পরে আমার মক্কেলের বাড়িতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে এ এইচ এম কামারুজ্জামান আমার মক্কেলসহ তার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। আমার মক্কেল একজন শহীদ পরিবারের সন্তান। তিনি বর্তমানে জাতীয় সংসদ সদস্য এবং এর আগে তিনি পরপর দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি মহাজোট সরকারের কেবিনেট শিল্প প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগ রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন অতীব বর্ণাঢ্য। সামাজিকভাবেও তার এবং তার পরিবারের অবস্থান বলতে গেলে সর্বজন শ্রদ্ধেয়।’

প্রকাশিত এমন বানোয়াট তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদনের কারণে তার এবং তার পরিবারের সম্ভমহানি ঘটেছে। এজন্য তিনি ওই মিথ্যা খবর প্রকাশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে মামলা মোকাদ্দমা করবেন।

এ কারণে প্রকাশিত খবরে উদ্ধৃতি হিসেবে আপনার বক্তব্যের সঠিকতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে আপনাকে (ফজলে হোসেন বাদশা) অত্র লিগ্যাল নোটিস প্রদান করা হলো। আরো বলা হয়, আপনি মহাজোট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত একাদশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য। প্রকাশিত ওই মিথ্যা খবরে বর্তমান সরকারেরও সম্মানহানি ঘটেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close