নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জুলাই, ২০১৯

ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ

মশা নিয়ে আতঙ্কের কিছু দেখছে না দুই সিটি!

ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া অথবা মশাবাহিত রোগ নিয়ে এখনো আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আর পরিস্থিতি যেন খারাপের দিকে না যায় সেজন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যেই এমন কথা বলছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি)। আবার ডেঙ্গুআক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নিয়েই দুই রকম তথ্য দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত এবং দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় ডিএসসিসি। অন্যদিকে ডিএনসিসি বলছে, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৯৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা তিনজন।

তবে মশক পরিস্থিতি নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকেই কাজ করা হচ্ছে জানিয়েছে দুই করপোরেশন। গত জানুয়ারিতেই ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন মশা নিয়ন্ত্রণে অ্যাকশন প্ল্যানের অনুমতি দেন বলে জানান ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শরীফ আহমেদ। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মার্চ থেকেই জনসচেতনতামূলক কাজ শুরু করা হয়। অন্যদিকে মৌসুমের আগেই বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় অর্থ্যাৎ জুনের আগে মার্চ মাসেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যাওয়ায় মশাবাহিত রোগ আগেই মানুষকে আক্রান্ত করছে বলে দাবি করেছেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন।

মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, এবার মৌসুমের আগেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়। আর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। ফলে দেখা যায়, মশার উপদ্রব আগে থেকেই বেড়ে যায় এবং বিভিন্ন স্থানে পানি জমতে থাকে। পানি পরিষ্কার করা হলেও বা ফেলে দিলেও পরের বৃষ্টিতে আবার পানি জমে যায়। তবে আমরা মার্চ থেকেই কাজ শুরু করি। ২৪ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত ক্রাশ প্রোগ্রাম করি। জনগণকে সচেতন করতে এপ্রিলে অবহিতকরণ কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দুই সপ্তাহের ক্রাশ প্রোগ্রাম।

অন্যদিকে নিজেদের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শরীফ আহমেদ বলেন, আমাদের আওতাধীন অংশে এখন ক্রাশ প্রোগ্রাম চলছে। এর আওতায় প্রতিটি জোনে আমরা আমাদের সব লজিস্টিক নিয়োজিত রেখেছি। অর্থ্যাৎ একটি নির্দিষ্ট জোনে একদিন আমাদের সব কর্মী মশার ওষুধ এবং মেশিন নিয়ে কাজ করছেন। পুরো প্রক্রিয়াটি দুবার পরিচালিত হবে ক্রাশ প্রোগ্রাম জুড়ে।

ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শরীফ আহমেদ বলেন, ওষুধ দেওয়ার সময় মশক কর্মীদের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতেই ওষুধ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া থাকে। ওষুধ বিতরণের কাজ পুরোটাই ওয়ার্ড পর্যায় থেকে হয়। তাই শুধু ভিআইপিদের বাড়ির আশপাশে দেওয়া হয় এমন অভিযোগ সত্য নয়। আর ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই মশার ওষুধ ব্যবহারের ‘অ্যাপ্রুভাল’ দেই আমরা। এরপরেও মাঠপর্যায় থেকেও ওষুধের নমুনা নিয়ে আমরা পরীক্ষা করি। কোথাও ওষুধের মান কম মনে হলে আমরা সেগুলো ব্যবহার করি না।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা সংস্থা নিজেদের উদ্যোগেও মশক কর্মী নিয়োগ এবং ওষুধ বিতরণ মেশিন কিনতে পারে বলে মত ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। তিনি বলেন, সবসময় আমাদের ওপর নির্ভর করে না থেকে বিভিন্ন বড় বড় সংস্থা ও স্থাপনা নিজেদের উদ্যোগেও ‘মসকিউটো ফাইটিং’ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। যেমন- আমাদের এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং বুয়েটের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। তারা নিজেরা চাইলেও মশককর্মী নিয়োগ দিতে পারে, মেশিন কিনতে পারে। প্রয়োজনে আমরা তাদের প্রশিক্ষণ দেব, উন্নতমানের ওষুধের জোগান দেব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close