প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৫ এপ্রিল, ২০১৯

মঙ্গলে কম্পন ও গোঙানি!

মঙ্গল গ্রহের অন্দর থেকে এই প্রথম শোনা গেল ‘চাপা কান্না’, ‘গোঙানি’র আওয়াজ! থরথর করে কেঁপে উঠেছে লাল গ্রহটি। শুধুই এক দিনের ঘটনা নয়, দফায় দফায় সেই গোঙানির আওয়াজ শোনা গেল চার দিন, যা অনুভব করার জন্য প্রায় ৫০ বছর ধরে হাপিত্যেশ অপেক্ষায় বসেছিলেন বিজ্ঞানীরা। যার নাম ‘মার্শকোয়েক’, যা বুঝিয়ে দিল, এখনো পুরোপুরি মরে যায়নি লাল গ্রহ। বদলাচ্ছে এর গঠন। বদলাচ্ছে তার অন্দর। আর সেই বদলানোর জাদুকাঠিটা এখনো লুকিয়ে রয়েছে মঙ্গলের বুকের!

ভূমিকম্পে যেমন থরথর করে কেঁপে ওঠে পৃথিবী, দুলে ওঠে মাটি, ফুলে-ফেঁপে ওঠে সাগর, মহাসাগর, এই প্রথম দেখা গেল ঠিক তেমনটাই ঘটে মঙ্গলেও। যার জেরে মঙ্গলের অন্দরের সেই চাপা কান্না শুনল নাসার পাঠানো মহাকাশযান ‘ইনসাইট’-এর ল্যান্ডারে থাকা ‘সিসমিক এক্সপেরিমেন্ট ফর ইন্টিরিয়র স্ট্রাকচার’ (সিস) যন্ত্রটি, যা আদতে একটি ফরাসি যন্ত্র। শুধু সেই চাপা কান্না শুনেই চুপ করে বসে থাকেনি ‘সিস’, রেকর্ড করে তা পাঠিয়েও দিয়েছে গ্রাউন্ড স্টেশনে। তারপর সেই শব্দকে আমাদের শ্রবণযোগ্য করে তোলা হয়েছে।

নাসার তরফে জানানো হয়েছে, মোটামুটি ভালোভাবে এই শব্দ ও কম্পনের হার ধরা পড়েছে গত ৬ এপ্রিল। তবে তার আগে, পরে আরো তিন দিন ওই শব্দ শুনেছে সিস। যদিও তা খুবই নিচু স্বরে।

ওয়াশিংটনে নাসার সদর দফতর থেকে মিশন অপারেশনসের সায়েন্স অপারেশন ওয়ার্কিং গ্রুপের চেয়ার জ্যোতির্বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ আনন্দবাজার ডিজিটালকে ই-মেলে লিখেছেন, ‘এটা একটা অসাধারণ সাফল্য। অভূতপূর্ব। এই প্রথম মঙ্গলের কম্পন ধরা পড়ল আমাদের কোনো যন্ত্রে। লাল গ্রহের অন্দরে এখনো কী কী ঘটে চলেছে, তা জানাতে এ ঘটনা খুবই সাহায্য করবে। কম্পন যেহেতু তরঙ্গই, তাই তা আরো ছড়াবে।

একই কথা বলেছেন কলকাতার ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের (আইসিএসপি) অধিকর্তা সন্দীপ চক্রবর্তীও। তার বক্তব্য, এবার হয়তো শিগগিরই এমন আরো কম্পন অনুভব করতে পারবে সিস। কারণ, চেহারায় পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক লাল গ্রহ। তার ব্যাস পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় অর্ধেক। ফলে, কম্পনের ফলে যে তরঙ্গের জন্ম হয়েছে, তা ছড়াতে বেশি সময় লাগবে না। শিগগিরই তা পৌঁছাবে পৃথিবীর বাতাসে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close