বান্দরবান প্রতিনিধি

  ১১ এপ্রিল, ২০১৯

বান্দরবানে মহাসাংগ্রাই পাহাড়ে সাজ সাজ রব

নববর্ষবরণে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে। জেলার চারদিকে এখন উৎসবের আমেজ। সেখানকার মারমা সম্প্রদায় উদযাপন করবে মহাসাংগ্রাই উৎসব। পাহাড়ি পল্লীতে এখন সাজ সাজ রব। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবানেই মারমা নৃগোষ্ঠীর জনসংখ্য বেশি। তাই বান্দরবানে মূলত এই সাংগ্রাইকে ঘিরে কয়েক দিন চলে বর্ণিল আয়োজন।

আর কয়েক দিন পরেই সাংগ্রাই উৎসব শুরু হবে। তাই নতুন পোশাক আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং গ্রামের আদিবাসীরা ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয় মার্কেটগুলোতে। শেষ মুহূর্তের বেচাকেনায় দারুণ খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারা।

মহাসাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে বাজার করতে আসা মংশৈপ্রু মার্মা জানান, প্রতি বছরের মতো এবারেও আমাদের সামনে নতুন বছর আসছে। তাই বাজার করতে এসেছি। পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন পোশাক ক্রয় করব। আর আনন্দের মধ্যদিয়ে নতুন বছরকে উদযাপন করব।

মহাসাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে বাজারে আসা মং মং সিং জানান, বাজারে এসেছি মা-বাবার জন্য নতুন পোশাক ক্রয় করব আর নতুন বছরের নতুন নতুন জিনিসপত্র দিয়ে বাড়িঘর সাজাব। একই সময়ে বাংলা নববর্ষ আর আমাদের সাংগ্রাই। তাই চার দিন আমরা বর্ণিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে এই নতুন বছরকে স্বাগত জানাব।

বান্দরবান বাজারের ব্যবসায়ী রধনু স্টোরের স্বস্তাধিকারী মো. সোহেল বলেন, বাঙালিদের পহেলা বৈশাখ আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নতুন বছরকে ঘিরে এখন জমজমাট আয়োজন চলছে পাহাড়ের প্রতিটি পরিবারে। বছরের এই সময়ে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়। দোকানে নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক ও পণ্য কালেকশন করি।

এদিকে প্রতি ছরের মতো এবারও বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে মহাসাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদ। বান্দরবানের মহাসাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কো কো চিং মার্মা জানান, এবার চার দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজন করছি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।

অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, ১৩ এপ্রিল সকালে বান্দরবান রাজার মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হবে সাংগ্রাই উৎসবের, আর শোভাযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত হবে বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা। ১৪ এপ্রিল বিকালে পবিত্র বুদ্ধমূর্তি স্মান, রাতব্যাপী পিঠা তৈরি উৎসব, ১৫ এপ্রিল বিকালে মৈত্রি পানিবর্ষণ, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর সবশেষে ১৬ এপ্রিল আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সন্ধ্যায় বিভিন্ন বিহারে বিহারে সমবেত প্রার্থনার মধ্যদিয়ে সমাপ্তি ঘটবে মারমা সম্প্রদায়ের এ ঐতিহ্যবাহী মহাসাংগ্রাই উৎসবের।

বান্দরবান সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বান্দরবান একটি শান্তপ্রিয় শহর। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চাইতে এই এলাকার পরিবেশ সবসময় শান্ত থাকে, তারপরেও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close