নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০১ অক্টোবর, ২০১৮

সেমিনারে বক্তারা

নদী দখল রোধে ওয়ার্কওয়ে হচ্ছে

বিশ্ব নদী দিবসের সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, এক সময় দেশে ১ হাজার ২০০ নদ-নদী ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশের বর্তমান নদ-নদীর সংখ্যা ৪০৫টি। এসব নদীও পলি জমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দখলের কারণে এবং নানাভাবে দূষিত হয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নদ-নদীগুলো রক্ষা করতে দখল, দূষণ প্রতিরোধ, নাব্য সৃষ্টি এবং ভাঙন প্রতিরোধে বহুবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাজধানীর চারপাশের নদীগুলো দখল প্রতিরোধে দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর দুই পাড়ের ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হবে।

গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আয়োজিত নদ-নদী রক্ষায় আইনের প্রয়োগ এবং উন্নয়ন বাস্তবতা শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন নৌ ও পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল জলিল, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন

মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নদ-নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে নদী খনন কাজ শুরু করছে। এজন্য বিগত ১০ বছরে ৩৮টি আধুনিক মানের ড্রেজার ক্রয় করেছে সরকার। আর এই সময়ে বেসরকারি পর্যায়ে আরো ১০০টি ড্রেজারের সমৃদ্ধ হয়েছে দেশ। এ কারণে আমরা অত্যন্ত জোর দিয়ে নদী খনন কাজ করতে পারছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নদ-নদী বাঁচিয়ে রাখতে চারটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। সেগুলোর হলো ১. নদ-নদীর দখল প্রতিরোধ ২. নদ-নদীর দূষণ প্রতিরোধ ৩. নদ-নদীর নাব্য ঠিক রাখা এবং ৪. নদ-নদীর ভাঙন প্রতিরোধ করা।

নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদ-নদীগুলোর দখল-দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই মধ্যে নদ-নদীগুলোর দখল প্রতিরোধে চারপাশের নদ-নদীগুলোর দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ করার কাজ শুরু করা হয়েছে। এরই মধ্যে ২০ কিলোমিটার ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে যারা এদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। হাজার হাজার মানুষকে মেরেছে। তারা ছিল ওই সময়ের রাজাকার। আর বর্তমান সময়ের রাজাকার হচ্ছে যারা নদী দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে। আমার তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি।

মূল প্রবন্ধে ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, নানা ধরনের শ্রেণিপেশার মানুষ দেশের নদ-নদীগুলোতে দখল-ভরাট ও দূষণ ঘটাচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও এসব প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে অনেক সময় অর্থ সংকটে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুস সামাদ বলেন, দেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার নদীপথ ছিল। নানা কারণে কিছু নদীপথ কমে গেছে। তবে বিদ্যমান নদীপথের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৮ হাজার নদীপথ খনন করে সচল রাখবে। আর পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৮ হাজার কিলোমিটার নদীপথ খনন করে সচল রাখবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close