প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০১ অক্টোবর, ২০১৮

বোমা মেরে চাঁদকে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল নাসা!

চাঁদকে ঘিরে এখনো অনেক রহস্য। পৃথিবীর এই উপগ্রহটি সম্পর্কে শোনা যায় নানা কথা। অনেক রোমান্টিক নামও আছে তার ব্লু মুন, ক্রিসেন্ট মুন, ফুল মুন ইত্যাদি। জেনে অবাক হবেন এই চাঁদকে পরমাণু বোমা মেরে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। এই ভয়ংকর কাজটি নাসা করতে চেয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়াকে ভয় দেখানোর জন্য। রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা সুন্দর চাঁদ সম্পর্কে এখানে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো-

১. চাঁদ গোলাকার নয় : চাঁদের আকৃতি আসলে ডিমের মতো। আপনি যখন এর দিকে তাকান তখন কিন্তু এর ছোট দুই প্রান্তের কোনো একটিকে দেখতে পান। চাঁদের ভর কেন্দ্র ঠিক এর জ্যামিতিক কেন্দ্রে অবস্থিত নয়। এটি জ্যামিতিক কেন্দ্র থেকে ১ দশমিক ২ মাইল দূরে।

২. সব সময় আমরা চাঁদের পুরোটা দেখতে পাই না। আমরা যখন চাঁদের দিকে তাকাই তখন এর ৫৯ শতাংশ দেখতে পাই। পৃথিবী থেকে চাঁদের বাকি ৪১ শতাংশ কখনোই দেখা যায় না। আপনি যদি এই তথ্য বিশ্বাস না করেন এবং এটা সত্য কিনা সেটা যাচাই করে দেখতে চাঁদের লুকিয়ে থাকা ওই ৪১ শতাংশের ওপরে গিয়ে দাঁড়ান তাহলে কিন্তু সেখান থেকে আপনি এই পৃথিবীকে দেখতে পাবেন না।

৩. ব্লু মুন হয়েছে আগ্নেয়গিরি কারণে : ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাতের পর ১৮৮৩ সালে ‘ব্লু মুন’ পরিভাষার জন্ম হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। সে সময় অগ্নুৎপাতের ফলে বায়ুম-লে এত বেশি ধুলো ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছিল যে মানুষ যখন পৃথিবী থেকে চাঁদের থেকে তাকিয়ে ছিল তখন তাকে দেখতে নীল মনে হয়েছিল। আর এ থেকেই তৈরি হয়েছে ‘ওয়ান্স ইন এ ব্লু মুন’ কথাটি। বিরল কোনো ঘটনা বলতে এই বাক্যটি ব্যবহার করা হয়।

৪. চাঁদকে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। যুক্তরাষ্ট্র একবার সত্যিই চাঁদের ওপর পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণের কথা চিন্তা করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা। বিশেষ করে রাশিয়াকে ভয় দেখানো। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার অত্যন্ত গোপনীয় এই পরিকল্পনার নাম ছিল ‘এ স্টাডি অব লুনার রিসার্চ ফ্লাইটস’ অথবা ‘প্রজেক্ট এ১১৯।

৫. ড্রাগনের কারণেই গ্রহণের ঘটনা। সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝে চাঁদ এসে পড়লে অথবা সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চাঁদ এসে দাঁড়ালে তখন সূর্য বা চাঁদের আলো সাময়িকভাবে ম্লান হয়ে যায়। একে বলা হয় চন্দ্রগ্রহণ কিম্বা সূর্যগ্রহণ। একটি প্রাচীন চীনা বিশ্বাস হচ্ছেÑ একটি ড্রাগন যখন সূর্যকে গিলে খেয়ে ফেলে তখন সূর্যগ্রহণ হয়। তখন চীনারা তাদের পক্ষে যতটা সম্ভব আওয়াজ সৃষ্টি করতে থাকে যাতে ড্রাগনটি ভয় পেয়ে দূরে চলে যায়।

চীনারা এক সময় আরো বিশ্বাস করত যে চাঁদের গর্তের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ব্যাঙ বসবাস করে। ৪০০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে যাওয়া একটি পাথর চাঁদকে আঘাত করলে ওই গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। ৬. চাঁদের কারণে পৃথিবীর গতি ধীর হয়। চাঁদ যখন পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসে তখন জোয়ারের সৃষ্টি হয়। নতুন কিংবা ফুল মুনের পরপরই এরকম হয়ে থাকে। তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন শক্তিও চাঁদ চুরি করে নেয়। আর সে কারণে পৃথিবীর বার্ষিক গতির সময় প্রতি ১০০ বছরে ১ দশমিক ৫ মিলি-সেকেন্ড করে শ্লথ হয়ে যায়। ৭. চাঁদের আলো। সূর্য একটি পূর্ণ চাঁদের চেয়েও ১৪ গুণ মাত্রায় বেশি উজ্জ্বল। সূর্যের মতো সমান উজ্জ্বলতায় জ্বলতে হলে প্রায় চার লাখ পূর্ণ চাঁদের প্রয়োজন। চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ যখন পৃথিবীর ছায়ার ভেতরে চলে যায় তখন চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা দেড় ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটও কমে যেতে পারে। ৮. লিওনার্দো দা ভিঞ্চি বুঝেছিলেন ক্রিসেন্ট কি জিনিস। চাঁদকে আমরা যখন ক্রিসেন্টের আকারে বা অর্ধচন্দ্রাকৃতির মতো দেখি তখন আমরা চাঁদ থেকে ছিটকে আসা সূর্যের আলোকেই দেখতে পাই। চাঁদের বাকি অংশটা খুব অস্পষ্ট দেখা যায়। সেটাও নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপরে। শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিই হলেন প্রথম কোনো ব্যক্তি যিনি উপলব্ধি করতে পারছিলেন যে চাঁদ আসলে সঙ্কুচিত ও প্রসারিত হচ্ছে না বরং এর কিছু অংশ লুকানো থাকে। ৯. চাঁদ পনির দিয়ে তৈরি : চাঁদের আরো অনেক কিছুই আছে যা এখনো আমাদের অজানা। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় এনিয়ে একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে জরিপে অংশ নেওয়া লোকজনের ১৩ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে চাঁদ দুধের পনির দিয়ে তৈরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close