গাজীপুরের শ্রীপুরে চিরকুট লিখে এক দম্পতি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা পুলিশের। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচতলার একটি কক্ষ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।

চিরকুটে লেখা হয়, মা-বাবা, ‘আমাকে মাফ করে দিও। আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না। আমি কাউকে দোষারোপ করি না, কারো কোনো দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতেছে, সবাই ভালো থাকবা। আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও মা। আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। আর তার জন্য সম্পূর্ণ আমি দায়ী।’

নিহত ইসরাফিল শেরপুরের ঝিনাইগাতি থানার হলদী গ্রামের মফিজুল হকের ছেলে। স্ত্রী রোকেয়া খাতুন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

রোকেয়ার বড় ভাই বোরহান উদ্দিন জানান, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের অমতে গত ৭-৮ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। পরে দুই পরিবারই তাদের বিয়ে মেনে নেয়। ইসরাফিল স্ত্রীকে নিয়ে তার মা-বাবার সঙ্গেই থাকত। গত ৪ দিন আগে ইসরাফিল ও রোকেয়া কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে চলে যায়। তারা বৃহস্পতিবার বাসায় আসে। শুক্রবার সকালে তাদের মৃত্যুর খবর জানতে পারি।

ইসরাফিলের মা কাজলী জানান, একই ভবনের পাশাপাশি ফ্লাটে তারা থাকেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যাই। ঘরে ইসরাফিলকে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে তাকে জড়িয়ে ধরি। এতে ইসরাফিল ফাঁসি থেকে খুলে বিছানায় পড়ে যায়। পাশেই খাটের ওপর বিছানায় পড়ে ছিল রোকেয়ার মরদেহ।

সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমির হোসেন জানান, খবর পেয়ে একই ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের কারণে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। স্বামী তার আত্মহত্যার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে চিরকুট লিখে নিজেও আত্মহত্যা করতে পারেন। তদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পৃথক দুটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

পিডিএস/জেডকে