এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

এমপি আয়েন বললেন চরিত্রহননে অপপ্রাচার

রাজশাহী-৩ আসনের ক্ষমতাসীন দলের এমপি আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন সরকার দলীয় নেতা সাইদুর রহমান বাদল। অভিযোগকারী পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তবে সংসদ সদস্যের দাবি, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে বাদল উল্লেখ করেছেন, হরিপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সোবানের ছেলে আজিমুদ্দিনকে আন্ধারকোঠা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী পদে চাকরি দেয়ার জন্য চার বছর আগে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন ৩ লাখ টাকা নেন। তিনি নিজে ঢাকায় গিয়ে ন্যাম ভবনে এমপি আয়েন উদ্দিনের বাসায় গিয়ে সেই টাকা দিয়েছেন। কিন্তু চাকরি হয়েছে আরেকজনের। পরবর্তিতে অনেক দেন দরবার করে হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান বজলে রেজভি আল হাসান মঞ্জিলের মাধ্যমে বছর খানেক আগে দুই লাখ টাকা ফেরত দেন সংসদ সদস্য আয়েন। এখনো ১ লাখ টাকা পাবেন তিনি।

অভিযোগপত্রে সাইদুর রহমান বলেন, আমার নামে বিট খাটাল করে দেওয়ার জন্য ওই সংসদ সদস্য আরো ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু তিনি তা করে দেননি। পরে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দিলেও ১ লাখ টাকা এখনো দেননি। দুইটি কাজ বাবদ ২ লাখ টাকা এমপির কাছে পাওনা রয়েছে। এজন্য ফোন করলে এমপি ফোন ধরেন না বা দেখা করতে গেলেও সাক্ষাৎ দেন না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আসন্ন

সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছেন। এতে সম্পূর্ণভাবে ইন্ধন জোগাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা।’

নৈশপ্রহরী নিয়োগের অর্থ লেনদেন বিষয়ে বলেন, ‘কোনো প্রকার অর্থ ছাড়াই সাইদুর রহমান বাদলের জামাইকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাদল আরো কিছু অন্যায় দাবি করেছে, যেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। এ কারণে আমাকে বিতর্কিত করতে ষড়যন্ত্র করে চরিত্র হরণের লক্ষ্যে অপপ্রচার করা হচ্ছে।’

আয়েন বলেন, ‘সাইদুর রহমান বাদল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। অর্থ অভাবে তিনি চিকিৎসা করতে পারছিলেন না। তিনি সেখান থেকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ফোন দেন। এরপর সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে বিষয়টি জেনে হাসপাতালে আবারও ছুটে যায় এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে তার চিকিৎসার জন্য দুই দফায় ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেই। এখন সুস্থ হয়ে অন্যের মদদে চরিত্র হরণের লক্ষ্যে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

অভিযোগকারী সাইদুর রহমান বাদল গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমি কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোনো ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করিনি। আমার অভিযোগ যদি মিথ্যা হয় তাহলে আমার বিরুদ্ধে এমপি আয়েন মামলা করুক।’

টাকা প্রদানের কোনো প্রমাণ আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে বাদল বলেন, ‘আমার সেক্রেটারির সামনে ওই টাকা ন্যাম ভবনে দিয়েছি। বিষয়টি পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াসিন আলীও অবগত।’

এ বিষয়ে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াসিন আলী প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘বাদলের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে এটা আমার কাছে স্বীকার করেছে এমপি আয়েন।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘এমপি আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের একটি অভিযোগ জেলা আওয়ামী লীগের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে এটি সাংগঠনিক কোনো বিষয় নয়। ফলে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। তবে পরবর্তি মিটিংয়ে অভিযোগটি উপস্থাপন করে সবার মতামতপূর্বক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close