প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ০৮ জুলাই, ২০১৮

কাজে আসছে না ‘কুশিয়ারা ডাইক’ ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশাহারা মানুষ

সিলেটের ঝুকিপূর্ণ কুশিয়ারা ডাইক ভেঙে বেশকিছু এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন গাইবান্ধার নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-

সিলেট : কোনো উপকারে আসছে না কুশিয়ারা নদীর তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ‘কুশিয়ারা ডাইক’। প্রতি বছরের মতো এবারও বাঁধের কোথাও না কোথাও ভেঙে গিয়ে কিংবা নিচু বাঁধের ওপর দিয়ে পানি উপছে অনাকাক্সিক্ষত বন্যার কবলে পড়েছে অনেক এলাকা। পাউবো কর্তৃপক্ষ জানায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর কালভার্ড বা ব্রিজ নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থানে কালভার্ড নির্মাণ করার কারণে ডাইক থেকে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার সময় এসব কালভার্ড ভেসে গিয়ে বাঁধের ভাঙন তরান্বিত করছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সিলেটের ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাকে বন্যার কবল থেকে রক্ষায় ‘কুশিয়ারা ডাইক’ নির্মাণ করা হয়। কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে প্রায় ৩০টি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে মুহূর্তেই তলিয়ে যায় হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৪ বছর ধরে ওসমানীনগরের সাদীপুর ইউনিয়নে বাঁধে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। গত ৩ বছর আগে লামাতাজপুর এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে তা সংস্কার করা হয়। এর কিছু দূরবর্তী সৈয়দপুর এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে প্রচ- বেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে নিচু বাঁধের ওপর দিয়ে প্রচ- বেগে পানি ঢুকছে। ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জে বাঁধের প্রায় ৩০টি স্থান ভেঙে গিয়ে বন্যাকবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ।

বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে ২০-২৫ স্থান ভেঙে যাওয়ার জন্য বাঁধের ওপর সড়ক উন্নয়নের কাজের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন। এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পেলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। দুই উপজেলার ১০ ইউনিনের অসংখ্য ঘরবাড়ি, অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলা হাসপাতাল, প্রশাসনিক কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও এলাকার অসংখ্য কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট বন্যার জলে তলিয়ে গেছে। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। সরকারি ও বিভিন্ন ব্যক্তির উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী বলেন, কুশিয়ারা ডাইকটি টেকশই নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর কালভার্ড বা ব্রিজ নির্মাণের কারণে ভাঙন তরান্বিত করছে।

গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। গরু, ছাগল হাঁস-মুরগি অল্পমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে আসবাপপত্র সরিয়ে নেওয়ার আগেই বাড়ি-ভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন নদীপাড়ের মানুষ। শনিবার সদর উপজেলার কামারজানিতে সরেজমিনে দেখা যায়, ঐতিহ্যবাহী কামারজানি বন্দরের ১০০ গজ উত্তরে গোঘাট গ্রাম। এই গ্রামে ১০ হাজার মানুষের বাস। অথচ, গ্রামটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই স্থানীয় প্রশাসনের। নদী ভাঙন দেখতেও আসেনি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তারা। ফলে গ্রামটি গিলে খাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র। বাকি বাসিন্দারা শেষ সম্বল সরিয়ে নিতে কাজ করছেন।

একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেন, শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। নদীতে পানি আসলেই তারা বালির বস্তা ফেলে নদী ভাঙন রোধে দায়সারা কাজ করে থাকে। এতে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়েই যাচ্ছে। যেখানে এক হাজার বালির বস্তা ফেলা দরকার সেখানে তারা দু-এক শ’ বালির বস্তা ফেলেই কাগজ-কলমে এক হাজার লিখেই রাখছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক হোসেন জানান, যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সম্পূর্ণ গোঘাট গ্রাম বিলিন হয়ে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist