প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
দেশে ফিরে সেনা আশ্রয়েই থাকবে রোহিঙ্গারা!
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে সেনাদের আশ্রয়েই থাকবে বলে এক প্রতিবেদনে এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে সংবাদ মাধ্যমটি বলেছে, জাতিগত নিধন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্প্রতি একটি চুক্তি করেছে। কিন্তু যে সহিংসতার ভয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তা এখনো বন্ধ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরলেও রোহিঙ্গারা নিজ ঘরবাড়িতে ফিরতে পারবে না। বরং তাদের থাকতে হবে মিয়ানমার সেনবাহিনীর আশ্রয়ে। অথচ তাদের বিরুদ্ধেই রয়েছে রোহিঙ্গা গণহত্যা চালানোর অভিযোগ। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে যে চুক্তি করেছে মিয়ানমার, তাতে সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে দেশটি।
সাম্প্রতিক নিবন্ধন বলছে, বাংলাদেশে নতুন পুরনো মিলিয়ে ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। তবে একদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা বলা হলেও, এখনো মিয়ানমারে সহিংসতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এখন রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া কি কোন ঝুঁকি তৈরি করতে পারে?
জবাবে একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু যারা যাবে তাদের তো সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর আশ্রয়েই থাকতে হবে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের নিয়ে গবেষণা করছেন মেঘনা গুহঠাকুরতা, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
তিনি বলেন, ‘ধরুন হিন্দু রোহিঙ্গারা বলেছেন সরকার চাইলে তারা ফেরত যাবেন। অনেক সরাসরি নির্যাতিত হয়নি কিন্তু অন্যরা পালিয়ে এসেছে বলে তারাও এসেছে। এখন ফেরত নিলেও তাদের বাড়িঘর পুড়ে গেছে। তাদের জন্য শেড করা হয়েছে। যখন তখন আবার ঘটনা ঘটতে পারে।’
মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতিগুলোর ওপর কি আস্থা রাখা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই না। যতক্ষণ তারা নাগরিকত্ব না পায় আর আন্তর্জাতিক সংস্থার তদারকি ছাড়া তারা যাবে না, এটিই তারা (রোহিঙ্গা) বলেছে।’
কিন্তু রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে থাকার পেছনে যেসব বেসরকারি দেশি ও আন্তর্জাতিক সংস্থারও স্বার্থ আছেÑ এ অভিযোগের সত্যতা কতটুকু?
তিনি বলেন, ‘এখন যে পরিস্থিতি সেটি সরকার মোকাবেলা করতে পারবে না। তাই আন্তর্জাতিক সংস্থার থাকা প্রয়োজন। আর আন্তর্জাতিক সংস্থা তারা চায় শরণার্থীদের যেন পুশব্যাক না করা হয়। এটি সত্যি যে এখানে লাভবান হওয়ার মতো অনেক পক্ষ আছে। কিন্তু দেখতে হবে রোহিঙ্গাদের যে চাহিদাগুলো সেসব সঠিকভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে কি না।’
"