reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ মার্চ, ২০২৪

মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পাশে আছি: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে আদর্শ, চেতনা নিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন আমার বাবা, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবেন, ভাগ্য পরিবর্তন করবেন, জীবনমান উন্নয়ন করবেন— সেই আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ তো ব্যর্থ হতে পারে না। সে জন্য সব কষ্ট, শোক বুকে নিয়েও আজ মানুষের পাশে আছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য।’

সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস (১৭ মার্চ) উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।

সভায় পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই কষ্ট, শোক, দুঃখ, যন্ত্রণা, বেদনা নিয়েও ভেবেছি— আমার বাবা তো সারাটা জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। আমার মা তাঁর পাশে ছিলেন। বাবা কারাগারে থাকতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে প্রতিটি সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন (মা) পর্দার আড়ালে থেকে। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের পেছন আমার মায়ের অবদান রয়েছে। এই যে আত্মত্যাগ, এটা তো বৃথা যেতে পারে না।’

বঙ্গবন্ধুর বারবার গ্রেফতার হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এদেশের ভাষা আন্দোলন তিনি শুরু করেন। বায়ান্ন সালে মক্তি পাওয়ার পর একটা শান্তি সম্মেলন হয়েছিল চীনে। তিনি চীনে গিয়েছিলেন। পাকিস্তানের একটা প্রতিনিধি দলের পূর্ববঙ্গের কমিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও ছিলেন। তখন কতই বা বয়স। কিন্তু একটি দেশে গিয়ে সেই সদ্য স্বাধীন দেশে মানুষের জীবনমান, কৃষকের অবস্থা, শ্রমিকের অবস্থা, নারীর ক্ষমতায়ন— প্রতিটি জিনিস সুক্ষ্মভাবে তিনি দেখেছিলেন। তার লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইটির মধ্যে সেই সময়কার মানুষের অবস্থা এবং সবচেয়ে লক্ষণীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে একটা দেশে গিয়ে পরিবর্তনটা গভীরভাবে উপলব্ধি করা, দেখা এবং তা লেখা। সেখান থেকে তার মেধার এবং দেশপ্রেমের নমুনা পাওয়া যায়। এই বইগুলো পড়লে জাতির পিতাকে জানতে পারবেন।’

১৯৪৮ সাল থেকে করা বঙ্গবন্ধুর আন্দোলনকে অনেক বিকৃত করা হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমনকি ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতার যে ভূমিকা ছিল, তা মুছে ফেলা হয়েছিল। অনেক জ্ঞানী-গুণীরা যেন ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে ওখান থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা অর্জনের পরও আমরা দেখেছি, ’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতার ইতিহাস থেকেও তাঁর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে ভাষা আন্দোলন থেকে বাঙালি জাতির অভ্যুত্থানের ইসিহাস সবই দেওয়া আছে। রাজনীতি করতে হলে, জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক হতে হলে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হলে, বঙ্গবন্ধুর ওপর সেই রিপোর্ট এবং তার লেখা বইগুলো প্রতিটি নেতাকর্মীর পড়া উচিত।’

দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সবাইকে হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলাম, পেয়েছি আমি এদেশের মানুষের ভালোবাসা। গ্রামে যখন ঘুরেছি, কত মানুষ মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছে, কাছে টেনে নিয়েছে, পাশে বসিয়েছে। মানুষের সেই ভালোবাসার কথা তো ভোলা যায় না। স্বার্থপর মানুষ অনেক আছে। আশেপাশে বেশি থাকবে, বেশি তাদের চাহিদা। কিন্তু গ্রাম-বাংলার সাধারণ মানুষ, তাদের চাহিদা খুব কম। সেজন্য আমার প্রচেষ্টাই হচ্ছ— জাতির জন্য বাবা জীবন দিয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দিনের পর দিন কষ্ট পেয়েছে, অনেকে হারিয়েও গেছে। এত আত্মত্যাগ কখনও ব্যর্থ হতে পারে না।’

বারবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করায় দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫ এর পর আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। আর পরপর একটানা চার বার আমরা ক্ষমতায়। এ কথা মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয় রাজনৈতিক নেতার কাছে। ক্ষমতা জনগণের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য পালন করা। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সব সংগঠনকে ধন্যবাদ জানাই, সংসদের ও স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরও। এই রমজানে, করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দীপু মনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী। বঙ্গবন্ধুর ওপর ওপর কবিতা আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close