করোনা মোকাবিলায় সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জন্য নেই নির্দিষ্ট কোনো গাইডলাইন। চিকিৎসকের জন্য নীতিমালা থাকলেও তা মানা হয়নি শুরু থেকেই। আর পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের ক্ষেত্রে তা পুরোপুরি উপেক্ষিত। এতে বাড়ছে তাদের মধ্যে সংক্রমণ। চিকিৎসকদের বিষয়টির দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দিচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা সংবাদকর্মীদের বেলায় নিজেদের অবহেলার কথা স্বীকার করলেন তারা।

কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের জন্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাউডলাইন থাকলেও শুরুতে তা কিছুটা উপেক্ষিতই ছিল এ দেশে। ফল দুই মাস পেরিয়ে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের সংখ্যা ৬০০-এর বেশি।

করোনায় আক্রান্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল রউফ বলেন, চিকিৎসকদের বলা হলো সব রোগীর ক্ষেত্রে পিপিই পরার দরকার নেই। তখন থেকে আমরা একটা মাস্ক পরে সেবা দেওয়া শুরু করি। এতে করে প্রচুর চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেছেন।

তবে চিকিৎসকদের বিষয়টি কাগজ-কলমে থাকলেও কোভিড-১৯ যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা সংবাদকর্মীদের বিষয়ে তেমন কোনো নির্দেশনা না থাকায় তাদের ঘাড়ে বিপদ চেপেছে সবচেয়ে বেশি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে কেবল পুলিশেরই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। এছাড়া র‌্যাব সদস্যও রয়েছে শতাধিক। দিন দিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। আর এই কাতারে সংবাদকর্মীর সংখ্যা প্রায় ১০০ জন।

এআইজি মিডিয়া পুলিশ সদর দফতর মো. সোহেল রানা বলেন, পরিস্থিতির কারণে সময় স্বল্পতার জন্য নিজেদের সুরক্ষা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। আমাদের কাজের ধরন অনুযায়ী আমরা বাড়তি ঝুঁকির মধ্যে পড়ছি। ডিবিসি নিউজের এডিটর ইন চিফ এম এম মনজুরুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের এবং সরকারের সব সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে যে কাজ করছি, সংবাদ প্রচার করে আমাদের গুরুত্ব হয়তো বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি।

চিকিৎসকদের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করলেও পুলিশ কিংবা সংবাদকর্মীর বিষয়টি আমলে না নেওয়া গাফিলতি মানছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, সব জায়গায় ইনফেকশন রোধের কমিটি আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাসপাতালের পরিচালক এটির সভাপতি তারা যদি সারা বছর সেটি মেনে চলত তাহলে হঠাৎ করে করোনা রোগী নিয়ে তাদের বিপাকে পড়তে হতো না।

এদিকে কোভিড-১৯ শনাক্তের ৬১তম দিনে এসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

পিডিএসও/তাজ