reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

কোলেস্টেরল কমাতে করণীয়

ছবি : সংগৃহীত

উচ্চ কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু ভালো খবর হচ্ছে এই ঝুঁকি আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। জীবনধারার কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে পারেন। শুধু কিছু সহজ পরিবর্তন করতে হবে জীবনযাপনে।

নিউ ইয়র্ক সিটির লেনক্স হিল হাসপাতালের একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সুজান স্টেইনবাউম। তিনি বলেন, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে দৈনন্দিন অভ্যাস যথেষ্ট সাহায্য করে। প্রয়োজনে ওষুধ খেতেও হতে পারে। তবে মাত্র কয়েকটি সাধারণ পরিবর্তন ওষুধের ডোজ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনে। কোলেস্টেরল কমাতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন স্টেইনবাউম। সেগুলো কী কী জেনে নিন।

১। ট্রান্স ফ্যাট নিষিদ্ধ করুন

ট্রান্স ফ্যাট আপনার এলডিএল বাড়ায়, আপনার এইচডিএল কমিয়ে দেয় এবং আপনার হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়- বলেন স্টেইনবাউম।কেনাকাটা করার সময় পুষ্টি তথ্যের লেবেল এবং উপাদানগুলো পরীক্ষা করুন। আপনি যদি প্যাকেজে 'আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড তেল' দেখতে পান, তবে এটি কিনবেন না।

২। ওজন কমান

কোলেস্টেরল কমানোর জন্য আপনাকে খুব বেশি ওজন কমাতে হবে না। ওজন বেশি হলে মাত্র ১০ পাউন্ড কমিয়ে ফেলুন, আপনি আপনার এলডিএল ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলবেন। তবে এটা আপনাকে সময়ের সাথে সাথে করতে হবে। একটি যুক্তিসঙ্গত এবং নিরাপদ লক্ষ্য রাখুন। সপ্তাহে ১ থেকে ২ পাউন্ড ওজন কমানোর লক্ষ্য রাখতে পারেন।

৩। অলস থাকবেন না

এইচডিএল বাড়াতে এবং এলডিএল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা ব্যায়াম করাই যথেষ্ট- বলেন কার্ডিওলজিস্ট সারাহ সামান। আপনি যদি সক্রিয় না হয়ে থাকেন তবে ধীরে ধীরে শুরু করুন। শুরুতে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য হলেও ব্যায়াম করুন। ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকুন এই সময়।

৪। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান

ওটমিল, আপেল ওবং মটরশুঁটি জাতীয় খাবারে দ্রবণীয় ফাইবার বেশি থাকে, যা আপনার শরীরকে কোলেস্টেরল শোষণ থেকে বিরত রাখে। গবেষণা বলছে; যারা প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ গ্রাম বেশি ফাইবার খেয়েছেন, তাদের এলডিএল কমে গেছে। কিন্তু সাবধান, একবাড়ে অত্যধিক ফাইবার পেটে খিঁচুনি বা ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে। ধীরে ধীরে ফাইবার গ্রহণ বাড়ান।

৫। মাছ খান

সপ্তাহে দুই থেকে চারবার মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। শুধুমাত্র মাছের ওমেগা-৩ চর্বিই হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো নয়, লাল মাংসকে মাছ দিয়ে প্রতিস্থাপন করলে লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাটের সংস্পর্শ কমিয়ে আপনার কোলেস্টেরল কমবে। সার্ডিন, টুনা ও স্যামনের মতো সামুদ্রিক মাছ পাতে রাখুন।

৬। অলিভ অয়েল খান

মাখনের বদলে অলিভ অয়েল খেলে এলডিএল কোলেস্টেরল ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে, যা ওষুধের কম ডোজের প্রভাবের মতো- বলেন সামান। জলপাই তেলের উপকারী চর্বি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বেছে নিন। এটি কম প্রক্রিয়াজাত এবং আরও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৭। বাদাম খান

বেশিরভাগ বাদাম এলডিএল কমাতে পারে। কারণ তারা স্টেরল ধারণ করে, যা ফাইবারের মতো শরীরকে কোলেস্টেরল শোষণ থেকে দূরে রাখে- বলেন স্টেইনবাউম। তবে অতিরিক্ত খাবেন না, কারণ বাদামে ক্যালোরি বেশি থাকে।

৮। মানসিক চাপ কমান

আপনি যখন চাপে থাকেন, তখন আপনার কোলেস্টেরল অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। আরাম করুন। একটি ভালো বই নিয়ে সময় কাটান। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করুন।

৯। মসলা ও ভেষজ পারে সাহায্য করতে

রসুন, কারকিউমিন, আদা, কালো মরিচ, ধনিয়া এবং দারুচিনির মতো মসলা খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি কোলেস্টেরলও উন্নত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন আধা থেকে এক কোয়া রসুন খেলে কোলেস্টেরল ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।

১০। ধূমপান ত্যাগ করুন

ধূমপান এলডিএল বাড়াতে পারে এবং এইচডিএল কমাতে পারে। একটি সমীক্ষায বলছে, যারা ধূমপান বন্ধ করেছেন তাদের ভালো কোলেস্টেরল এক বছরে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

১১। হাসুন প্রাণখুলে

হাসি ওষুধের মতো, এটি এইচডিএল বাড়ায়- স্টেইনবাউম বলেছেন। প্রাণখোলা হাসি পারে আপনার স্ট্রেস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হাসুন প্রাণখুলে
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close