reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

নায়ক মান্নাকে হারানোর ১৬ বছর

ঢাকাই চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন এস এম আসলাম তালুকদার ওরফে নায়ক মান্না। আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি এই গুণী অভিনেতার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী।

২০০৮ সালের এই দিনে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। মৃত্যুর ১৬ বছর পার হলেও তার জনপ্রিয়তার এতটুকুও ভাটা পড়েনি। এখনও মানুষ তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে জন্ম নেওয়া এস এম আসলাম তালুকদার; যিনি মান্না নামেই সবার কাছে পরিচিত ও প্রিয়। ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি তার ছিল প্রচণ্ড ঝোঁক। কলেজে পড়ার সময় প্রচুর সিনেমা দেখতেন। নায়ক রাজ্জাকের সিনেমা হলে তো কথাই নেই। স্বপ্ন দেখতেন তিনিও একদিন অভিনয় করবেন। অনেকের ইচ্ছে থাকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার; কিন্তু তার ইচ্ছে ছিল নায়ক হওয়ার।

তাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর ঢাকা কলেজে পড়াকালীন ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই রুপালি জগতে পা রাখেন।

মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলি’। তবে দর্শক নজরে পড়েন ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে একটি শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন তিনি। কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমাতে দুর্দান্ত অভিনয় করে মান্না হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের ভরসার নাম।

মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ ছবিগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে। ১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় এ সুপারস্টার।

অভিনেতা হিসেবে সাফল্য পাওয়ার পর মান্না নিজে প্রযোজক হয়ে কৃতাঞ্জলি কথাচিত্র থেকে একাধিক সুপারহিট ছবি প্রযোজনা করেছিলেন। সিনেমাগুলো হচ্ছে ‘লুটতরাজ’, ‘লাল বাদশা’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা মাতার আমানত’।

অভিনেতা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, পাঁচবার বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন মান্না।

তবে মৃত্যুর এতো বছর পরও নায়ক মান্নার শেষ সিনেমা ‘জীবন যন্ত্রণা’ আলোর মুখ দেখেনি। শোনা যাচ্ছে, চলতি বছর সিনেমাটি মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে সিনেমাটির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, এরইমধ্যে ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমাটি ৩৫ মি.মি. থেকে ডিজিটালে রূপান্তরের কাজ চলছে। বলা যায়, কাজ শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রযোজক।

জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমাটি। প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরুর সঙ্গে ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন জাহিদ হোসেন। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগর প্রমুখ।

ব্যক্তিগত জীবনে মান্না তার কর্মজীবনের শুরুর দিকের সহ-অভিনেত্রী শেলী কাদেরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির সিয়াম ইলতিমাস মান্না নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নায়ক মান্না,ঢাকাই চলচ্চিত্র,অভিনেতার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close