সম্পাদকীয়
আকাশ সাম্রাজ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
একটি মাইলফলক। একটি সুখবর। একটি অহংকার। আজ ১০ মে, বৃহস্পতিবার ২০১৮। স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করতে চলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের অনেক দেশের কাছে এককালের তলাবিহীন ঝুড়ি আজ সৌর্য, বীর্য ও ঐশ্বর্যের প্রতীকে পরিণত হওয়ার কারণে ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত হয়ে নিজের মর্যাদাকে যথাযথ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্বে নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে- এমন দেশের সংখ্যা ৪৫-এর কাছাকাছি। আজ বাংলাদেশ সেই পালকগুচ্ছে আরো একটি পালক যুক্ত করে স্যাটেলাইট সাম্রাজ্যের এক গৌরব অংশীদার হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করবে। বর্তমানে গোটা বিশ্বে স্যাটেলাইট অর্থনীতির পরিমাণ ১০১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। দিন দিন প্রচন্ড সম্ভাবনা জাগিয়ে এ বাজার বাড়ছে।
‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থ ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ। বাকি ১ হাজার ৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হবে বৈদেশিক উৎস থেকে। বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৭০০ মাইল গতিতে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে। স্যাটেলাইটটি রাশিয়ার ইন্টার স্পুটনিকের কাছ থেকে কেনা ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমায় উড্ডয়ন করা হবে এবং পরের দুটির জন্য ইতোমধ্যে অরবিটাল স্লট পেতে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ অন্যের স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে গিয়ে বছরে ব্যয় করে ১১ মিলিয়ন ডলার। নিজস্ব স্যাটেলাইট না থাকার কারণে বাংলাদেশকে এ টাকা গুনতে হয়েছে এবং হচ্ছে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সফলতা এলে এ অর্থের সাশ্রয় হবে বলে সকলের বিশ্বাস। এ ছাড়া এখনই দেশের অভ্যন্তরে যে ৫০ মিলিয়ন ডলারের বাজার তৈরি হয়ে আছে, নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সেই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তরঙ্গ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পর বাকি অব্যবহৃত অংশ ভাড়ার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও একটি পথ উন্মোচিত হবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতার অবসান হবে বলে সবার প্রত্যাশা।
আমরা মনে করি, আকাশ সাম্রাজ্যে কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ এক নতুন যুগে প্রবেশ করল। দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি নতুন সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পিডিএসও/তাজ