reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ মে, ২০১৮

রমজান আসছে, দামও বাড়ছে

প্রতিবছর পবিত্র মাহে রমজান আসলেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি যেন একটা নিয়মেই পরিণত হয়েছে। রোজায় ব্যবহার্য প্রত্যেকটি জরুরি জিনিষের দাম এক-দেড় মাস আগে থেকেই বাড়তে শুরু করে। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটছে না। এই রমজানের আগে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও চিনিসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এরই মধ্যে বেগুন, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বরাবরের মতো খুচরা বিক্রেতারা দাম বাড়ার জন্য পাইকারদের দুষছেন। পাইকাররা দাবি করছেন, বাড়তি চাহিদার কারণে দর বৃদ্ধি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্যপণ্যের তথ্য অনুযায়ী, পেঁয়াজের দর কেজিতে গড়ে ৫ টাকা বেড়েছে। রসুনের দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর ও মধুবাগ বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজায় বেশি চাহিদার পণ্যের মধ্যে বাড়ছে মসলা জাতীয় কিছু পণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধান কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা; যা ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহেও সব ধরনের পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়েছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে গড়ে ১০ টাকা বেড়ে চীনা রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে বাজারে সপ্তাহখানেক আগে যে আদা বিক্রি হতো ৭৫ টাকায় সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, রমজানে পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাড়তি চাহিদা রয়েছে। এই ৩ পণ্য অনেকটা আমদানিনির্ভর। রমজানের আগে মাসের শুরুতে ৯ দিনের মধ্যে ৭ দিন ছুটির ফাঁদে ছিল। এতে বন্দরে পণ্য খালাসে ধীরগতি থাকায় সরবরাহ কম হয়েছে। তাছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে রাজধানীতে পণ্য সরবরাহ কম হচ্ছে। এদিকে বাজারে রমজানের বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। ফলে পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে দাম স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।

শান্তিনগর বাজারের এক ক্রেতা জানান, সংযমের মাসে পণ্যের দাম কমার কথা। উল্টো পণ্যমূল্য বাড়ানোর সুযোগ নেন ব্যবসায়ীরা। যৌক্তিক কারণ না থাকলেও অতি মুনাফার জন্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এ বিষয়ে সরকারের বাজার তদারকি জোরদার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

টিসিবির সয়াবিন তেল প্রতিকেজি ৮৫ টাকায় খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে। কোম্পানির বোতলজাত সয়াবিন তেল ১০৫ থেকে ৭ টাকা লিটারে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় উঠেছে। টিসিবি খোলাবাজারে প্রতিকেজি আখের চিনি ৫৫ টাকায় বিক্রি করেছে। বাজারে সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনিও একই দরে বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর শাহ আলী বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতারা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত কয়েকদিন ধরে সবজি সরবরাহ কম হচ্ছে। এ কারণে পাইকারিতে দাম বেড়ে গেছে। খুচরায় সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ টাকা কেজি কাঁচামরিচ ৬০ টাকায় উঠেছে। প্রতিকেজি বেগুন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল গড়ে ৩৫ টাকা। পটোল, ঢেঁড়স, ঝিঙা ও চিচিঙ্গাসহ অন্যান্য সবজি কেজিতে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, রমজানে ১০ থেকে ১২ পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এবার এসব পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ আছে। কোনোভাবেই দর বৃদ্ধির কথা নয়। এর পরেও চাঁদাবাজি, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, যানজট ও বন্দরে জাহাজজট এসব কারণে বৃদ্ধির কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। অনেক ক্ষেত্রেই তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দরবৃদ্ধি করছেন। এ বিষয়ে সরকারের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এতে দরবৃদ্ধি স্থায়ী হবে না। তিনি রমজানে বাজার স্বাভাবিক রাখতে একসঙ্গে বেশি পণ্য না কেনার জন্য ক্রেতাদের আহ্বান জানান।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রমজান,দাম বাড়ছে
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist