পাবনা প্রতিনিধি

  ২১ মে, ২০১৭

সাঁথিয়ায় কল্পিত মাদরাসা এবার জাতীয়করণের চেষ্টা

শিক্ষার্থী নেই একজনও, ঘর ছিল না এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। তার পরও কাগজে-কলমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী দেখিয়ে ভুয়া তালিকার মাধ্যমে বই তুলে বিক্রি করেছেন মাদরাসার প্রধান শিক্ষক। আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আর-আতাইকুলা ইউনিয়নের এক ইবতেদায়ি মাদারাসা। কিন্তু অস্তিত্বহীন এই মাদরাসায় তিনজন ভুয়া শিক্ষকের নামে উপজেলা থেকে বেতন দেওয়া হয়েছে নিয়মিত। এ নিয়ে উপজেলাবাসীর জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলার আর-আতাইকুলা ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা গ্রামে খোঁজ মিলেছে শিক্ষার্থীবিহীন এই অদ্ভুত মাদরাসার। স্থানীয়দের অভিযোগ-এবার সরকারি অর্থের লুটপাটের উদ্দেশ্যে লোক দেখানো ঘর তুলে চলছে জাতীয়করণের চেষ্টা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৫-১৬ বছর ধরে মাদরাসাটির কোনো কার্যক্রম নেই। একজন ছাত্রও নেই, তবে কাগজ-কলমে শিক্ষক আছেন তিনজন। মাদরাসার ঘরও ছিল না এক যুগ ধরে। গত বছর একটি চারচালা ঘর তোলা হয় সরকারীকরণের আশায়। তবে আশ্চর্যের বিষয় বছরের পর বছর একটি অস্তিত্বহীন মাদরাসা শিক্ষকদের উপজেলা থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে যেন কারো কোনো দায় নেই।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর আগে বামনডাঙ্গা গ্রামে একটি ইবতেদায়ি মাদরাসা চালু হয়। পরবর্তীতে একই মাঠে কমিউিনিটি প্রাইমারি স্কুল চালু করা হয়। মাদরাসা শিক্ষকরা ঠিকমতো পাঠদান না করায় মাদরাসাটি থেকে একে একে সব ছাত্রছাত্রী চলে যায় এবং মাদরাসাটি বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে ১২-১৩ বছর আগে ঝড়ে মাদরাসা ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। তখন থেকে মাদরাসাটি শুধুই কাগজ কলমে রেয়ছে। একযুগ ধরে এর কোনো অস্তিত্বই ছিল না।

দুই বছর আগে সরকার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারীকরণ করা শুরু করলে এ মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মৌলভী শাহজাহান আলী সরকারি হওয়ার আশায় আবার ফন্দিফিকির শুরু করেন। নতুন করে একটি ঘর তোলেন। কিন্তু ঘর তোলা পর্যন্তই শেষ, সেটি এখন মানুষের খড় ও গরু-ছাগল রাখার জায়গা হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই মাদরাসার হেড মৌলভী কাগজ-কলমে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের উপস্থিত দেখিয়ে উপজেলা পরিষদ থেকে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে বেতন তুলে আসছেন। তিনি ভুয়া তালিকা জমা দিয়ে প্রতিবছর নতুন বইও অফিস থেকে আনেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, এ মাদরাসার হেড মাস্টার তিনি কেমন মৌলভী, যে প্রতারণা করে বছরের পর বছর বেতন তুলে খাচ্ছেন? এটা কি তার জন্য জায়েজ? খুঁজে বের করে এ মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মৌলভী শাহজাহান আলীকে মাদরাসার বিভিন্ন প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি এ ব্যাপরে কোনো খবর প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমির আলী জানান, এ মাদরাসার বেতন হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। প্রতারণা করে বেতন তুললে তা অবশ্যই ফেরত দিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist