হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা)

  ২১ জানুয়ারি, ২০২০

‘হুজুরের’ দেওয়া গর্ভপাতের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে শিশু

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় ধর্ষণের শিকার মাদরাসা ছাত্রীকে জোর করে গর্ভপাত করানোয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সংকটাপন্ন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে জোর করে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়ান মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক আব্দুল হালিম সাগর (৩৫)। উপজেলার রোয়াইলবাড়ী বাজার সংলগ্ন আশরাফুল উলূম জান্নাতুল মাওয়া মহিলা মাদরাসায় এই ঘটনা ঘটে। আক্রান্ত শিশুটি বর্তমানে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল চিকিৎসাধীন আছে। এ ঘটনায় রোববার কেন্দুয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন শিশুটির পিতা।

এদিকে ঘটনার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়েছে ২ সন্তানের জনক অভিযুক্ত আব্দুল হালিম। তিনি উজজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের চরআমতলা কোনাবাড়ী গ্রামের ফারুখ মিয়ার ছেলে। কয়েক বছর আগে রোয়াইলবাড়ী বাজার সংলগ্ন আমতলা এলাকা অর্ধ-আবাসিক কওমী মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করে সুপারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আক্রান্ত শিশুর বাড়িতে তার ভিকটিমের দুই চাচা-চাচীসহ প্রতিবেশিরা জানান, মাতৃহারা শিশুটি মাদরাসায় পড়তো। গত বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ মেয়েটির পেটে ব্যাথা হয়। এক পর্যায়ে রক্তক্ষরণ হলে অন্তঃসত্ত্বা বিষয়টি নজরে আসে। মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, কয়েক মাস পূর্বে মাদরাসার হুজুর আব্দুল হালিম সাগর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে, ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে তাকে গর্ভপাতের ওষুধ খাইয়ে দিয়েছেন। আমরা ধর্ষণকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এদিকে এতে অকাল গর্ভপাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সংকটাপন্ন শিশুটি মুমূর্ষু হয়ে পড়লে প্রথমে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন ডাক্তার। গতকাল সোমবার তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার এসএমএ সেলিম জানান, তারা ভিকটিম সাপোর্টে কাজ করে যাচ্ছেন। হাসপাতলের আবাসিক মেডিকেল অফিসার একরামুল হাসান বলেন, শিশুর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো আছে। এ ছাড়া মানসিক অবস্থার জন্য কাউন্সিলিং করছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দুয়া থানার ওসি রাশেদুজ্জামান বলেন, ধর্ষক আব্দুল হালিমকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পেমই তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, আসামীর বাড়ী ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close