সালাহ্উদ্দিন শুভ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
লাউয়াছড়ার সংরক্ষিত লেকে বনপ্রহরীদের মাছ শিকার
মোলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের স্টুডেন্ট ডরমিটরি লেক থেকে বনপ্রহরীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে। উদ্যানের তৃতীয় গেইট বাগমারা ক্যাম্পের ওই লেক থেকে বৃহস্পতিবার প্রায় ৩ মন মাছ শিকার করা হয়। বনপ্রহরী বুলবুল তার সহযোগী কয়েকজনকে নিয়ে গোপনে এই মাছ শিকার করেন বলে অভিযোগ উঠে।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। পরিবেশবাদীসহ ট্যুর গাইডরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ বিষয়ে বনপ্রহরী বুলবুল সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি স্টুডেন্ট ডরমেটরি লেকে জাল ফালানোর কথা স্বীকার করলেও মাছ শিকারের কথা এড়িয়ে যান। তবে অনুসন্ধানে মাছ শিকারের প্রমাণ হিসেবে লেকের পাশে অসংখ্য মরা ছোট মাছ এবং ঘোলা পানি দেখা যায়।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রে জানা যায়, লাউয়াছড়া স্টুডেন্ট ডরমিটরি লেক থেকে শিকারকৃত মাছের কিছু অংশ তার সহযোগীদের প্রদান করেন খাওয়ার জন্য, তবে বেশিরভাগ মাছ বুলবুল নিয়ে যায় তার নিজ দায়িত্বে। এদিকে ডরমেটরির দায়িত্বে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকাল করে জানা যায়, লেক থেকে জাল ফালানোর বিষয়টি তারা স্বচক্ষে দেখেছেন। তবে মাছ নেওয়ার সময় তারা কাজে ব্যস্ত ছিলেন, বিধায় দেখেন নি।
জানতে চাইলে উদ্যানের বিট কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে লোকমুখে শুনেছি।’ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, ‘মাছধরা বিষয়টি তিনি জানেন না, তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি কমলগঞ্জ শাখার সহ-সভাপতি অজানা আহমদ কামরান বলেন, ‘উদ্যানের বন্যপ্রাণীর একমাত্র পানির উৎস স্টুডেন্ট ডরমিটরি লেক। আমরা মেছোবাঘসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর জল ও খাবারের উৎস হিসেবে অনেক আন্দোলন করে বন বিভাগ ও লাউয়াছড়া সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সহযোগিতায় লেকে মাছ অবমুক্ত করি। কিন্তু এভাবে মাছ শিকার করা মানে জীববৈচিত্র্যের খাবার সংকট তৈরি করা এবং তাদের প্রজনন ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা।’
"