কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

  ২১ আগস্ট, ২০১৯

ভবনধসের শঙ্কা নিয়ে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা

কাউখালীতে ৬৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের মধ্যে ১৮টি ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিনেও এসব ভবন সংস্কার কিংবা মেরামত করা হয়নি। ফলে ১৫ শত এর বেশি শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। এসব বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা। ছাদের কিছু স্থানে বের হয়ে আছে রড। কোথাও রয়েছে ফাটল। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে প্রাণহানীসহ বড় কোন দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলো হলো পূর্ব শিয়ালকাঠী হাজীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য জোলাগাতী মোল্লার হাট বিদ্যালয়, দত্তেরহাট বিদ্যালয়, চিরাপাড়া কে এম বিদ্যালয়, পশ্চিম জিবগা পারসাতুরিয়া বিদ্যালয়, উত্তর কেউন্দিয়া বিদ্যালয়, শীর্ষা বিদ্যালয়, কেউন্দিয়া বিদ্যালয়, সয়না বিদ্যালয়, পশ্চিম মাগুরা বিদ্যালয়, উত্তর হোগলা বিদ্যালয়, মধ্য জোলাগাতী আদর্শ বিদ্যালয়, দাসেরকাঠী বিদ্যালয়, সুবিদপুর বিদ্যালয়, কেশরতা বিদ্যালয়, সাপলেজা বিদ্যালয়, নিলতী বিদ্যালয় ও কাউখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সরজমিনে এ সব বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবনের কোনটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা গেছে। ছাদের ভীমের পলেস্তরা খসে পড়ে রড বের হয়ে এসেছে। কোন বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় জোড়াতালি দিয়ে টিনসেট ঘর নির্মাণ করে পাঠদান করা হচ্ছে। আবার কোন কোন ভবন জড়াজীর্ণ ও পরিত্যক্ত হলেও শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারনে বাধ্য হয়ে পাঠ করতে হচ্ছে। এর মধ্য জোলাগাতী আদর্শ সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ টিন দিয়ে তৈরি। এ সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ১ থেকে দেড় যুগ পূর্বে নির্মাণ হলেও নি¤œ মানের কাজ থাকায় এবং প্রতিপক্ষের কোন তদারকি না থাকা ও উদাসিনতার কারনে ভবনগুলো এই অবস্থা হয়েছে।

কাউখালী মডেল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত রায় বলেন, ক্লাসে এসে যেমন শিক্ষার্থীরা ভয়ে থাকে তেমনি আমরাও ভয়ে থাকি। বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে হচ্ছে। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোদেলা, শেখ নাবিল আহাম্মেদ বলেন, ক্লাস করতে ভয় লাগে কিন্তু স্যারেরা ক্লাস করতে বলে তাই ক্লাস করি। মনে ভয় নিয়ে ক্লাসে বসে থাকি। মধ্য জোলাগাতী মোল্লারহাট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমাউন কবির জানান, তার বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার কারনে পাঠদানের শিক্ষার্থীর অবস্থা একেবারে হাতে গোনা কয়েকজনে এসে দাঁড়িয়েছে।

কাউখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম জামান জানান, উপজেলার ১৮টি বিদ্যালয়ে ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব বিদ্যালয়ের নামের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এর প্ররিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি ভবন জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণের জন্য টেন্ডার হলেও স্কুলের কাজ এখনও ঠিকাদাররা শুরু করেননি। তাছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান বন্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close