জামালপুর প্রতিনিধি

  ০৭ জুলাই, ২০১৯

নির্মাণসামগ্রী নিম্নমানের হওয়ায় কাজ বন্ধ করে দিলেন স্থানীয়রা

জামালপুর পৌরসভায় এক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে ঠিকাদারির হাতবদল ও নিম্নমানের অভিযোগ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ ও এলাকাবাসী। পৌর এলাকার পলাশগড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে এই নিম্নমানের অভিযোগ পাওয়া যায়। এর প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সকালে এই কাজ বন্ধ করেন তারা।

তবে ঠিকাদারের দাবি, উপজেলা প্রকৌশলী কাজ দেখে গেছেন, কিন্তু তাদের কিছু বলেন নাই।

২০১৮-১৯ অর্থ বছরের এলজিইডির অধিনে ৪৯ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের ঠিকাদারি নেয় ফোয়াদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মিঠু। তার কাছ থেকে ঠিকাদারি কিনে নেয় রাফি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী শফিকুল ইসলাম। এখন সেই কাজে নিম্নমানের রড, জমাটবাধা সিমেন্ট, ময়লাযুক্ত পাথর ও নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

নিম্নমানের কাজ করার বিষয়ে নির্মাণ শ্রমিক কামাল মিয়াসহ কয়েকজন বলেন, ‘আমাদের মালিকরা যেভাবে বলবে আমরা সেই ভাবেই কাজ করবো। তবে এখানে জমাটবাধা সিমেন্ট, ময়লা যুক্তপাথর ও নিম্নমানের খোয়া দিয়ে ৬-১ ঢালায় করছি। আমাদের করার কিছুই নেই।’

পৌরসভার পলাশগড় এলাকার বাসিন্দা জাকিরুল ইসলাম বলেন, স্কুল ভবন নির্মাণে ময়লা যুক্ত পাথর ও সিমেন্ট কম দিয়ে বালি বেশি দিচ্ছে। আবার সিমেন্টগুলিও জমাটবাধা। আমরা কোন কিছু বললে, তারা আমাদের কথার কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না, নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করছেন। এভাবে কাজ করলে ভবনটিতে টেকসই হবে না। ঝুঁকিতে পড়বে শিক্ষার্থীরা।

ভবন নির্মাণের কাজ করা রাফি এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. শফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করছি। সিমেন্টগুলি বৃষ্টির পানি পড়ে একটু শক্ত হয়ে গেছে। তবে কাজের কোন সমস্যা হবে না। আর পাথরে একটু বালু বা মাটি থাকবেই এটা কোন সমস্যা নয়। এগুলো ইঞ্জিনিয়ার সাহেব দেখেছেন, তিনি কোন কিছু আমাদের বলেন নাই।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আক্তার বলেন, ‘এখানে তারা কখন কবে কাজ করে সেটাও আমরা জানি না। আজকে স্কুলে এসে দেখি তারা ঢালাইয়ের কাজ করছে। ৬/১ ডালাই করা হচ্ছে জমাট বাধা সিমেন্ট, ময়লা যুক্ত পাথর ও নিম্ন মানের রড দিয়ে। এখানে ছোট ছোট কমলমতি ছেলেমেয়েরা শিক্ষা নিতে আসে। নিম্নমানের কাজ হলে ভবন ধসে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই আমি বলবো যাতে করে এখানে নিম্নমানের কাজ করা না হয়। একই অভিযোগ করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমি তাদেরকে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করতে নিষেধ করলেও তারা আমার কথায় কর্ণপাত না করলে স্থানীয়দের নিয়ে আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেই।

জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ওই কাজের দেখাশোনার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কর্মরত শিক্ষকদের। তাদের কথা মতো কাজ চলবে। এছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা লিখিত অভিযোগ দিলে ভবন নির্মাণের কাজটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close