এইচ আর তুহিন, যশোর

  ২৫ মে, ২০১৯

কেশবপুরে কিশোর খুন

ঘটনার ৮ মাস পর মূল রহস্য

ঠিক যেন এক ক্রাইম পেট্রল!

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কিশোর তরিকুল ইসলাম (১৫) খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পুরো কাহিনি যেন এক ক্রাইম পেট্রল। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার আসামি শরিফুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে আটকের পর আদালতে হাজির করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে শরিফুল আদালতে ১৬৪ ধারায় পুরো ঘটনার জবানবন্দি দেয়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তরিকুলকে খুন করে শরিফুলের শ্যালক রবিউল ও আল-আমিন। পিবিআই যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সকালে উপজেলার সাতবাড়ীয়া পাচানীপাড়া গ্রামের একটি বাগান থেকে কিশোর তরিকুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা নজরুল ইসলাম কেশবপুর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবদুল মান্নান জানান, আসামি শরিফুল ইসলাম নিহত তরিকুল ইসলামের আপন বড় ভাই। দুই ভাই তার বাবার কাঠমিস্ত্রীর কাজে জোগাল (সহকারী) হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার আনুমানিক দুই সপ্তাহ আগে অভিযুক্ত বড় ভাই শরিফুল ইসলাম কেশবপুর থানার কমলপুর গ্রামের রশিদ বিশ্বাসের মেয়ে জেসমিন আরাকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর আসামি শরিফুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যান। সেখান হতে তার বাবার সঙ্গে কাজ করার জন্য আসতেন। বিষয়টি শরিফুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের ভালো লাগেনি। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিশেষ করে শরিফুলের বড় চাচা শ্বশুর খলিলুর রহমান ওরফে লেদ খলিল বিষয়টি নিয়ে নাখোশ হন। তিনি বলেন, তোমার বাড়িতে তোমার ছোট একটা ভাই আছে, সে তো তোমার বাবার সঙ্গে কাজে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে শরিফুলের মনে রাগের সৃষ্টি হয়। বাড়িতে এসে তার বাবা-মাকে বলে, তোমাদের ছোট ছেলেকে তো কাজে পাঠাতে পারতে, আমি শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেছি, আমাকে কেন কাজে যেতে বলো? এ কথা শুনে সেই সময় শরিফুলের মা শরিফুলকে সংসার হতে পৃথক হওয়ার জন্য বলেন। বিষয়টি শরিফুল শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জানান। পরবর্তী সময়ে যখন শরিফুল শ্বশুরবাড়িতে যান, তখন তার শ্যালক রবিউল ইসলাম শরিফুলকে বলেন, তুমি তো ঠিকমতো কাজও করতে পারো না, আবার পৃথক হয়ে আমার বোনকে খাওয়াবা কী? সবচেয়ে ভালো হয় তোমার বাবার সব সম্পত্তি পেতে ও তোমার চাচাদের শায়েস্তা করতে তোমার ছোট ভাইকে সরিয়ে দিলে তুমি সবদিক থেকেই লাভবান হবা। শরিফুলের বড় চাচা শ্বশুর শরিফুলকে জানান, যদি তার শ্যালক রবিউল ইসলামের কথা মতো কাজ না করে, তাহলে তোমার স্ত্রীকে আর পাঠানো হবে না। এমন হুমকিতে শরিফুল তার ছোট ভাইকে খুনে সম্মতি দেন।

ঘটনার দুই দিন আগে শরিফুলের মা তার বাবা বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘটনার দিন ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর রাত আনুমানিক ১১টার পরে শারিফুলের শ্যালক রবিউল এবং ফুফাত শ্যালক আল-আমিন তার বাড়িতে যান। সেই সময় শরিফুল ও তার ছোট ভাই তরিকুল টিভি দেখছিলেন। শরিফুলের শ্যালকরা ঘরে প্রবেশ করে তরিকুলকে কৌশলে বাইরে নিয়ে খুন করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close