সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৪ মে, ২০১৯

সিরাজগঞ্জে হচ্ছে ইকোনমিক জোন কর্মসংস্থান হবে ৫ লাখ বেকারের

উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত ঘনবসতিপূর্ণ সিরাজগঞ্জ জেলা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত তাঁতকুঞ্জ এবং উত্তরবঙ্গের শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত ৯টি উপজেলা ও ৬টি পৌরসভা নিয়ে গড়ে ওঠা এই জেলার কোল ঘেষে প্রবাহিত হচ্ছে ভয়াল যমুনা। প্রতি বছরই যমুনার করাল গ্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলায় বসবাসকারী মানুষের একাংশ। ক্ষতিগ্রস্তরা এরই মধ্যে নিজেদের কৃষিজমি, ক্ষুদ্র তাঁতশিল্প, অন্যান্য রোজগারের পথসহ বসবাসের মাথা গোজার ঠাঁইও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকেই।

বিগত বিএনপি সরকারের উদাসীনতায় এবং নদী শাসনে ব্যর্থতায় সিরাজগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে ছিল বঞ্চিত। একদিকে যমুনার হিং¯্র থাবা অন্যদিকে কর্মসংস্থান হারিয়ে তখন থেকেই অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিলেন।

স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো। আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আদর্শ বাস্তবায়নের সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার নদী শাসনে সফলতাসহ রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে চলেছেন। শুধু তাই নয় বিশ্বের অনেক দেশেরই নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।

অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। ‘প্রত্যেকটা গ্রাম হবে শহর’, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ শেখ হাসিনার এই দৃঢ় পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সিরাজগঞ্জ সদর থানা সয়দাবাদে এবং বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ১ হাজার ৪২ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠছে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন’। গত ৩ এপ্রিল এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জানা যায়, প্রথম ধাপে ভূমি উন্নয়নসহ ১১টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ১২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। তাছাড়াও জাপান, কোরিয়া, প্রতিবেশী ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে ইকোনমিক জোনে উৎপাদন কারখানা তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।

এই ইকোনমিক জোনে শিল্প মালিকদের সংশ্লিষ্ট শিল্প উপযোগী করে শিল্প প্লট তৈরি, রাস্তা, ড্রেন, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসলাইন স্থাপন, ফায়ার স্টেশন, পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ, বন্ডেড ওয়্যারহাউস, ব্যাংকিং সুবিধা, কনফারেন্স সেন্টার, মেডিকেল সেন্টার, চাইল্ড কেয়ার সেন্টার, ডরমিটরি এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তাছাড়াও শিল্প স্থাপনের উপযোগী অবকাঠামো তৈরি করে সেবা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।

সাথে সাথে যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের জন্য বেলকুচি উপজেলার বেড়াখাড়–য়া এলাকায় ১৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হবে পুনর্বাসন কেন্দ্র। যেখানে ৭৬১টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এখানে থাকবে স্কুল কলেজ, মাদরাসা, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, খেলাধুলার মাঠসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। আর এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে বসবাসকারীদেরও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানায় ইকোনমিক জোনের লোকাল প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা, সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ-কামারখন্দ-২ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না।

সিরাজগঞ্জে ইকোনমিক জোন বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে যমুনার ভাঙাগড়ার এই এলাকার ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।

এই ইকোনমিক জোনের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হবে। আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে মনে করছে সচেতন মহল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close