কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
সুদের টাকা না দেওয়ায় দেনাদারের ঘরে তালা
সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় অসহায়ের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা। গত মঙ্গলবার সকালে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার মঙ্গল ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ফলে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে ঘরের বাইরে রাত কাটিয়েছে বলে ভুক্তভোগী হেলাল সরদারের পরিবারে অভিযোগ।
অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি নাসির উদ্দিন মৃধা একই গ্রামের মনাই মৃধার ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতা নাসির মৃধা ৩ বছর আগে মাসে ৪ হাজার টাকা সুদে আইয়ুব আলী সরদারের ছেলে হেলালকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ দেয়। এরপর থেকে হেলাল সরকার প্রতি মাসে নিয়মিত টাকা দিয়ে আসছিল। কিন্তু অভাবের সংসারের কারণে কয়েক মাস যাবৎ সুদের টাকা না দিতে পারায় ঘরে তালা দিয়ে দেয় নাসির মৃধা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার পর হেলাল, তার স্ত্রী ও ৭ বছরের সন্তান শুভ ঘরের বাইরে আছে। ভুক্তভোগী হেলালের স্ত্রী সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমরা তাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করেছি, ঈদের পরে আমাদের ঘরে মেহমান আসবে, আমাদের সময় দেন, কিন্তু আমাদের সময় না দিয়ে ঘর থেকে বের করে তালা দিয়ে দেন।’
ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. মান্নান বেপারী বলেন, ‘আমরা এলাকার সালিশদাররা বসে মিট করে দিয়ে ছিলাম যে, মূল টাকা পাবা সুদ পাবা না; কিন্তু সে আমাদের কথা না শুনে ওই বাড়ি গিয়ে ঘরে তালা দেয়। আমরা কি করতে পারি বলেন, সে কাউকে মানে না।’
জানতে চাইলে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান বলেন, ‘সুদের ব্যবসা নিয়ে এর আগেও কয়েকবার অন্যদের দরবার করতে হয়েছে, আমি নিজেও বলেছিলাম সুদের ব্যবসা বন্ধ করার জন্য, এতে আমাদের ছাত্রলীগের তথা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, কিন্তু সে আমার কথা শোনে নাই।’
অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘একটা মানুষ কত ধৈর্য ধরতে পারে টাকার জন্য, আমি আমার সম্পূর্ণ টাকা চাই। টাকা পাই নাই, তাই তালা দিয়েছি, কিন্তু আমার মা এখন তালা খুলে দিয়েছে।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক মীর সুজন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’ মাদারীপুর পুলিশ সুপার সরোয়ার হোসেন বলেন, আমি ব্যাপারটা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।
"