সাহারুল হক সাচ্চু, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ)

  ২৫ মে, ২০১৮

উল্লাপাড়ার ৯ সেতু ভাঙা-গড়ার খেলা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার উধুনিয়া ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে তৈরি ৯ সেতুই এখন পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউনিয়নের উধুনিয়া-মহেষপুর ৫ কিলোমিটারের মধ্যে সাতটি এবং বিনায়েকপুর-উধুনিয়া সাড়ে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে তৈরি সেতু দুইটি এই অবস্থা। শুধুই দেখার শোভা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, হেঁটেও পার হওয়ার সুযোগ হয়নি কারো। সেতুগুলো সংযোগ সড়ক না হওয়া এই দুরাবস্থা তৈরি হয়েছে। ফলে অর্ধকোটি টাকার অধিক ব্যয় নির্মিত এই সেতুগুলো অকেজোই পড়ে আছে। বরং এই সেতুর কারণেই স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছেন না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, সিরাজগঞ্জ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উধুনিয়া-মহেষপুর ও বিনায়েকপুর সাবমারজেবল সড়ক নির্মাণ করা হবে। এর জন্য অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ করা যাবে। তখন সেতুগুলোর নির্মাণ কাঠামো ভেঙে সাবমারজেবল সড়কের উপযোগী করা হবে বলে জানান।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় প্রত্যন্ত নিচু এলাকা উধুনিয়া ইউনিয়ন। প্রায় ২০ বছর আগে এই ইউনিয়নের উধুনিয়া-মহেষপুর ৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের চিন্তা করে আগাম ভিত্তিতে নির্মাণ করা হয় ৭টি সেতু। এতে সে সময় সরকারি প্রায় সাড়ে ৭ লাখ করে সাড়ে ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়। অপরদিকে দেড় যুগ আগে একই এলাকার বিনায়েকপুর-উধুনিয়া প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কে দুইটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এর জন্যও ব্যয় হয় ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু সেতুগুলো দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা, কেউ কোনো দিন পায়ে হেঁটেও পার হতে পারেনি। এ সড়ক দুইটি নিয়ে স্থানীয় এলজিইডির নতুন পরিকল্পনা করছে বলে জানানো হয়।

স্থানীয় এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় সোয়া ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে এলজিইডি বিভাগ। এর মধ্যে প্রতাপ থেকে মহেষপুর ঢালু পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ হয়েছে। এই কাজের অংশ হিসেবে উল্লাপাড়া এলজিইডির আওতায় ১৯৯৮ সালে মহেষপুর থেকে উধুনিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়কের বিভিন্ন স্থানে ৭টি সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

এ সেতুগুলো নির্মাণ সময়কাল থেকে প্রায় ২০ বছর পার হতে চলেছে। এত বছরেও সড়কপথটির আর উন্নয়ন হয়নি। সেই কাঁচা সড়কপথ অবস্থাতেই রয়েছে। এ সড়কের বেশির ভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই বেশ বেহালদশা দেখা দেয়।

সরেজমিন পুরো সড়কপথ বেশ বেহাল দেখা যায়। সেতুগুলো সড়ক থেকে বেশ উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। সব কয়টি সেতুর দুই পাশের ঢালু সড়ক অনেকটা ধসে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর স্বাভাবিক বন্যায়ই এখানকার গোটা এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এ সময় সড়কও পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে থাকে। সে সময় শুধুমাত্র সেতুগুলো ওপরের কিছু অংশ জেগে থাকে বলে তারা জানান।

অপরদিকে ২০০০ সালে বিনায়েকপুর থেকে উধুনিয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কপথের মাঝামাঝি দীঘলগ্রামে দুইটি সেতু নির্মাণ করে এলজিইডি। এটি নির্মাণে ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর দুই পাশের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এই সেতু কোনো কাজেই আসছে না স্থানীয়দের। বন্যার সময় গোট সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকে।

জানতে চাইলে উল্লাপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সড়ক দুইটি উঁচু করে নির্মাণ করা হবে ভেবেই হয়তো সে সময় সেতুগুলো উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে বাস্তবে বন্যাকবলিত এলাকা বলে সড়কগুলো স্থায়ী হবে না ভেবে এখন সাবমারজেবল সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। গয়হাট্রা থেকে বিনায়েকপুর হয়ে চয়ড়া পর্যন্ত এবং দিঘলগ্রাম হয়ে বিনায়েকপুর সড়কের উধুনিয়া থেকে ১ কিলোমিটারেরও বেশি সাবমারজেবল সড়ক নির্মাণ নির্মাণ করা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist