ঝালকাঠি প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০১৮

ঝালকাঠিতে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা ঝরে যাচ্ছে পান : বাজারে আগুন

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে ছত্রাকজনিত অজ্ঞাত রোগে ঝালকাঠিতে পচে যাচ্ছে পান। গত এক সপ্তাহে এ রোগে পানগাছের পাতা ঝরে পড়ছে। এ পরিস্থিতির কারণে প্রথম দিকে বাজারে পানের সরবরাহ খুব বেড়ে যাওয়ায় কমে গিয়েছিলো পানের দাম। বর্তমানে পানের সংকট থাকায় বাজারে আগুন সমতুল্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চাষিরা। আগে পান চাষিরা বাজারে এক চল্লি (৩৬ পিস) ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে পান সংকটের কারণে প্রতি চল্লি সত্তর থেকে আশি টাকা দরে সেই পান বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন হাট-বাজারে।

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পানের গ্রাম হিসেবে পরিচিত ‘বারকইকরন’র পানচাষি অলিউর রহমান জানান, তার ৩০ শতাংশ জমিতে পানের বরজ রয়েছে। অজ্ঞাত রোগে পান ঝড়ে যাচ্ছে। এতে তাঁর ৪০ হাজার টাকার পান নষ্ট হয়েছে।

সদর উপজেলার বারই বাড়ি এলাকার পান চাষি অসিম মন্ডল জানান, তার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হবে। কৃষিবিদ কামরুন্নাহার তামান্না জানান, পান একটি অর্থকারী ফসল। আমাদের দেশে পানের বরজ খুব বেশি দেখা না গেলেও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। দেশে বিদেশে রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা। এতে অনেক ঔষধি গুণ বিদ্যমান। কিন্তু রোগবালাই পান উৎপাদনের একটি প্রধান অন্তরায়। পানে গোড়া পচা, ঢলে পড়া, পাতা পচা, অ্যানথ্রাকনোজ, সাদা গুঁড়া ইত্যাদি রোগ দেখা যায়। স্ক্লেরোসিয়াম রফসি (ঝপষবৎড়ঃরঁস ৎড়ষভংরর) নামক ছত্রাক। ছত্রাকগুলো প্রধানত মাটি বাহিত এবং অন্যান্য শস্য আক্রমণ করে। মাটিতে জৈব সার বেশি ও খড়কুটো থাকলে এবং পানি সেচের মাধ্যমে আক্রান্ত ফসলের জমি হতে সুস্থ ফসলের মাঠে বিস্তার লাভ করে। রোগাক্রান্ত লতা-পাতা বরজ থেকে তুলে পুড়ে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধী পানের জাত ব্যবহার করতে হবে। গভীরভাবে জমি চাষ দিয়ে রোদ্রে ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে। নতুন বরজ তৈরির ক্ষেত্রে সুস্থ সবল রোগমুক্ত পানের লতা সংগ্রহ করতে হবে। পানের বরজ সবসময় আগাছা মুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, আমরা চাষিদের পাশে আছি। সবসময় চাষীদের প্রয়োজনানুযায়ী পরামর্শ দিতেছি। প্রাকৃতিক কারণে এখন পান চাষীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে আসলে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, পানচাষীদের এ মৌসুমে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। তাদের আর্থিক ক্ষতির কথা চিন্তা করে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানোর প্রক্রিয়া চলছে। বরাদ্দ এলে সহায়তা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist