কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

  ০৯ মার্চ, ২০২৪

কালীগঞ্জে অভিযোগ

ব্যবসার কথা বলে ৪২ লাখ টাকা নিয়ে উধাও 

ছবি: প্রতীকী

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ফাঁদে ফেলে ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোকলেছুর, গোলাম রহমান ও ফয়সাল নামের তিন প্রতারকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

জানা যায়, ভিন্নভাবে একই প্রতারক চক্রের কাছে প্রতারিত হয়েছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মৃত হুজুর আলীর ছেলে অহিদুল ইসলাম, একই গ্রামের মৃত ছামছদ্দিনের ছেলে লিটন হোসেন ও চন্ডিপুর বাজারের স্কুল শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম। পৃথকভাবে তাদের ফাঁদে ফেলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয় চম্পট দিয়েছে প্রতারক চক্র।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী অহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ৩ মেয়াদে ২৫ লাখ টাকা, লিটনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ও সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই টাকা কালীগঞ্জ শহরে বসে লেনদেন হয় বলে জানান স্কুলশিক্ষক সিরাজুল ইসলাম। এরমধ্যে অহিদুল ইসলাম ১ লাখ টাকা নগদ অ্যাকাউন্টে ও বাকি টাকা নগদ প্রদান করেন।

প্রতারণার শিকার অহিদুল ইসলাম জানান, প্রতারক ফয়সাল তার কাছে মুরগির ব্যবসার প্রস্তাব নিয়ে আসেন। ফয়সাল তাকে জানান, তার ভাই বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা। সরকারিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৪০টি করে মুরগির বাচ্চা ও ১০ কেজি করে খাবার দেওয়া হবে। এই বিশাল কার্যক্রম ডিলারদের মাধ্যমে করা হবে। বিরাট লাভ হিসাব করে লোভের ফাঁদে পা দেন অহিদুল ইসলাম। তিনি যোগাযোগ বাড়ান ফয়সালের সঙ্গে। এরপর ফয়সাল তাকে কালীগঞ্জ শহরে তার বসের কাছে ডেকে নিয়ে যান। ফয়সালের বস মোকলেচুর রহমান ও গোলাম রহমানের কাছে নতুন ব্যবসার ধারণা পান অহিদুল। তারা তাকে বিশ্ব বিখ্যাত রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়ির ব্যবসার অফার করেন। এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে ১ লাখে ৩০ হাজার টাকা করে লাভ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। কিছুদিন পর ভারত থেকে কথিত ব্যবসায়ী এসে ৩০ লাখ টাকা মূল্যের রোলেক্স ব্র্যান্ডের ২৮৪টি ঘড়ির অর্ডার নিশ্চিত করেন।


  • পৃথকভাবে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে চম্পট দেয় প্রতারক চক্র
  • ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা বলে ফাঁদের ফেলে চক্রটি
  • তিনজনের অভিযোগ পেয়েছি। প্রতারকদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওসি আবু আজিফ

অভিযোগে বলা হয়, মোট ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এরমধ্যে তারা প্রদান করবে তিন কোটি টাকা আর বাকি টাকা অহিদুলকে পার্টনারের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে দিতে হবে। কথাবার্তার একপর্যায়ে সবাই মিলে শপথ করে ব্যবসায়ের লাভ সমান ভাগে ভাগ করে নেওয়া হবে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২৪ লাখ টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন অহিদুল ইসলাম। এরপর নগদ অ্যাকাউন্টে আরো ১ লাখ টাকা দেন অহিদুল ইসলাম। এভাবে প্রতারক চক্র অহিদুল ইসলাম, লিটন ও সিরাজুল মাস্টারের কাছ থেকে মোট ৪২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দেন। ঘটনার পর অহিদুল ইসলাম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়েছেন। একই সময়ে চন্ডিপুরের সিরাজুল ইসলাম ও লিটনকে ফাঁদে ফেলে একই চক্র। যে বিষয়টি জানতেন না অহিদুল।

প্রতারিত হওয়া অহিদুল ইসলাম বলেন, আমার কাছ থেকে তারা ২৫ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে আমি জানতে পারি তারা আমার এলাকার লিটন হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম মাস্টারের সঙ্গেও একইভাবে প্রতারণা করেছে। এরপর আমরা একসঙ্গে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আজিফ বলেন, এ বিষয়ে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। তাদের মধ্যে একজনের ১ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ আছে। প্রতারক চক্রের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি বলেও জানান তিনি।

পিডিএস/জেডকে

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ,প্রতারক,ফাঁদ,টাকা,উধাও
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close