এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আমতলীর দৌলতের শাখা

খাল খননে বাধা বিক্ষোভ চাষিদের

দৌলতের শাখা খাল খননের দাবিতে বুধবার আমতলীর চলাভাঙ্গা গ্রামে কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ। ছবি: প্রতিদিনের সংবাদ

বরগুনার আমতলীতে খাল খননের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন কৃষকরা। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চলাভাঙ্গা মৌজার কয়েকশ কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা এতে অংশ নেন।

জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মৌজার মধ্যে দিয়ে ‘দৌলতের শাখা খাল’ নামে একটি খাল ছিল। এই খালে ১৯৮৬-১৯৮৭ সালে বন্দোবস্ত মামলার অনুকূলে মো. সামসের আলীর নামে একজনকে ‘ভূমিহীন’ হিসেবে দেড় একর জমি বন্দোবস্ত দেয় আমতলী ভূমি কার্যালয়। কিন্তু বন্দোবস্ত নেওয়ার পর তিনি খালের প্রায় ১ একর জমি ভোগদখল শুরু করেন।

এদিকে চলাভাঙ্গা মৌজায় প্রায় ২০০ একর আবাদি জমির চাষাবাদ দৌলতের শাখা খালের সেচের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমানে খালটি শুকিয়ে গেছে। কোন পানি না থাকায় ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জমির ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। সম্প্রতি গ্রামের কৃষকদের দাবির পরিপেক্ষিতে খাল খননে অর্থায়ন করেন আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা। গত মঙ্গলবার খালটি খননে কাজ শুরু হলে বন্দোবস্ত গ্রহীতা সামসের আলীর ছেলে ফারুকুল বারী বাধা দেন। এর প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভ করেন চাষিরা। এতে ‘কৃষক বাঁচাও, খাল কাটা হোক’, ‘খাল কাটতে যারা বাধা দেয়, তাদের বিচার চাই’ শ্লোগান দেন তারা।


  • খাল খননে বাধা দিচ্ছে জমি বন্দোবস্ত গ্রহীতা, ভুক্তভোগী কয়েকশ চাষি।
  • ভূমিহীন না হয়েও বন্দোবস্ত গ্রহণের অভিযাগো সামসের আলীর বিরুদ্ধে।
  • ২০০ একর জমির সেচ খালের পানের ওপর নির্ভরশীল।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া, মজিদ হাওলাদার, শাহাজাহান, নয়া চৌকিদার, ফারুক, মোকলেচ চৌকিদার, রব মিয়া, ছালাম, দুলাল গাজী, ওহাব মোল্লা, মজিবুর মোল্লা, নিজাম হাওলাদার, ছোবাহান মোল্লাসহ অন্যরা।

জানতে চাইলে ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কৃষকদের জন্য খালটি খনন করা খুব প্রয়োজন। খনন না হলে এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।’

স্থানীয় বাসিন্দা জলিল মিয়া বলেন, ‘বন্দোবস্ত গ্রহীতা সামসের আলীর নামে অনেক রেকর্ড জমিজমা আছে। তিনি কীভাবে ভূমিহীন হিসাবে জমি বন্দোবস্ত পান?’ তদন্ত করে সামসের আলীর নামে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি করেন তিনি।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে বন্দোবস্ত গ্রহীতার ছেলে ফারুকুল বারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘কয়েকশ কৃষক বোরো মৌসুমে জমিতে পানি দিতে পারছেন না। কৃষকদের দাবির পরিপেক্ষিতে আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে খালটির খনন কাজ শুরু হলেও বন্দোবস্ত গ্রহীতার পরিবার বাধা দিচ্ছে।’ তিনি খালটি পুনঃখননের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আবু জাহের বলেন, ‘ভূমিহীন না হয়েও বন্দোবস্ত নেওয়া ও সেচের জন্য খাল খননে বাধা দেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বরগুনা,আমতলী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close