ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি

ফসলি জমির মাটি  ইটভাটায়, উৎপাদন ব্যাহত

ফটিকছড়ির হারুয়ালছড়ি গ্রামে ইট তৈরির জন্য ট্রলি করে ভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। -প্রতিদিনের সংবাদ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য বিক্রি হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃষকদের স্বল্পমূল্যে জমির উর্বর মাটি কিনে ইটভাটায় বেশি মূল্যে বিক্রি করছে। এতে জমির উর্বর শক্তি নষ্ট হয়ে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতিবছর শীত মৌসুমে আমন ধান কাটার পরপরই ফসলি জমির মাটি বিক্রি শুরু হয়। নিচু জায়গা ভরাট করা ও ইট তৈরিসহ বিভিন্ন কাজের জন্য চলছে ওই ফসলি জমির মাটি বেচাকেনা। প্রতিদিন ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান, ট্রলি ও ট্রাকে করে ফসলি জমি থেকে উর্বর মাটি কেটে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভাটার মালিক এসব মাটি ইটভাটার আশপাশে স্তুপ করে রেখে পরে সেই গুলো ইচ্ছেমতো ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করছেন।

উপজেলার পাঁচ পুকুরিয়া গ্রামের কৃৃষক জানে আলম বলেন, মাটি ব্যবসায়ীর কাছে এক একর জমির উপরিভাগের দুই থেকে আড়াই ফুট মাটি সাড়ে সাত হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।

হারুয়ালছড়ি গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেন বলেন, আমি দুই একর জমির উপরিভাগের আড়াই ফুট মাটি সাড়ে তেরো হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। ফসল উৎপাদনের লোকসান যাওয়ায় এমনটি করা হচ্ছে বলে জানান।

ফটিকছড়ি উপজেলার কাজিরহাটে মাটি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী আবু তালেব মিয়া বলেন, এ উপজেলায় আগে ৩০ থেকে ৩৫টি ইটভাটা ছিল। এখন অর্ধ শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এ কারণে প্রতিদিন মাটির চাহিদাও বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষকের থেকে পতিত জমির মাটি কিনে তা ভাটায় সরবরাহ করা হয়।

যুগিনীঘাটা গ্রামের এক ভাটার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইট তৈরির জন্য পতিত জমির সঙ্গে ফসলি জমির মাটিও কেনা হচ্ছে। আর মাটি কেনা হচ্ছে ব্যবসায়ী এবং অভাবী কিছু জমির মালিকের কাছ থেকে।

ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, জমির উপরিভাগের দেড় থেকে দুই ফুট অংশের মধ্যেই মাটির মূল উর্বরশক্তি বিদ্যমান। কিন্তু ওই অংশটিই কেটে নেওয়ার ফলে জমির উর্বরা শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। ওই শক্তি ফিরে আসতে পাঁচ থেকে ছয় বছর লাগে। অসাধু ব্যবসায়ী ও জমির মালিক অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য কৃষকের থেকে মাটি কিনে জমির উর্বরশক্তি নষ্ট করছে।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কৃষি বিভাগকে এ ধরনের মাটি বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি ক্রয়-বিক্রি করলে তা প্রশাসন জানে না।

পিডিএস/এস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি,ইটভাটায় জরিমানা,ফসলি জমির মাটি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close