আতিকুর রহমান আজাদ, কালকিনি (মাদারীপুর)
মাদারীপুরের ডাসার
টাকা-পয়সা নিয়ে বাবার বাড়ি স্ত্রী, থানায় স্বামীর অভিযোগ
মাদারীপুরের ডাসারে বিয়ের পর স্বামীর টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যাওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে তাসলিমা আক্তার স্বপ্না নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে। দুই দফায় প্রায় ১২ লাখ টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ডাসার থানায় একটি লিখিত দিয়েছেন তার স্বামী মো. ওসমান বেপারী। তবে গৃহবধূর দাবি, প্রতারণার মাধ্যমে ওসমান তাকে বিয়ে করেছে, তিনি কোনো টাকা-পয়সা নেননি।
এর আগে ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ডাসার থানায় অভিযোগ দেন ওসমান বেপারী। পরে গত রবিবার সন্ধ্যায় জেলার কালকিনি উপজেলার সংবাদকর্মীদের কাছে মামলার কপি উপস্থাপন করেন তিনি।
অভিযুক্ত তাসলিমা আক্তার স্বপ্না ওরফে স্বপ্না সরকার মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বেতগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। জন্মগতভাবে তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিলেন। পরে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তাসলিমা আক্তার নাম নেন। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার সাভার উপজেলার গেন্ডা এলাকার ব্যবসায়ী মো. ওসমান বেপারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর শরীয়ত মোতাবেক ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাসলিমা আক্তার স্বপ্নার সঙ্গে ওসমান বেপারীর বিয়ে হয়। পরে প্রায় দেড় বছর সংসার করেন তারা। তবে প্রথম দফায় ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর স্বামীর অবর্তমানে নগদ ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। পরে তার পরিবার ও স্থানীয় মাতুব্বরদের বৈঠকের পর পুনরায় সংসার শুরু করেন তারা।
- দুই দফায় প্রায় ১২ লাখ টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
- ধর্মান্তরিত হয়ে ব্যবসায়ী ওসমান বেপারীকে বিয়ে করে স্বপ্না
- প্রথমবার স্থানীয় বৈঠকের পর ফিরলেও এবার রাজি নন গৃহবধূ
এদিকে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল দ্বিতীয়বার ঘরে থাকা নগদ ৪ লাখ টাকা ও ১ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে যান। দুই দফায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকার সম্পদ্দ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগকারী ওসমান বেপারী বলেন, ‘আমার সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে তাসলিমা আক্তার স্বপ্না। তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে আমাকে বিয়ে করেছে। তার পরিবারকে প্রতিমাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৮ হাজার করে টাকা দিয়েছি। আমার টাকা-পয়সা নিয়ে স্বপ্না তার বাবা-মাকে ফ্রিজ থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় মালামাল কিনে দিয়েছে। তারপরও দুইবারে আমার কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে সে। আমি তাসলিমা আক্তার স্বপ্নাকে সংসারে চাই।’
অভিযোগ বিষযে জানতে চাইলে তাসলিমা আক্তার ওরফে স্বপ্না সরকার বলেন, ‘আমাকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করেছেন ওসমান। আমি মাঝেমধ্যে গিয়ে তাদের বাসায় থাকতাম। বাবার বাড়ি আসার সময় আমি তার কোনো টাকা-পয়সা নিয়ে আসিনি।
ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার বলেন, ‘ওসমান তার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন, অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পাঠিয়েছে। তার ভিত্তিতে আমি স্বপ্নাকে ডেকে ছিলাম। স্বপ্নার ভাই দেবাশিষ বলেছে, আমরা নিজেদের মদ্যে সমাধান হয়ে যাব।’
থানায় অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সময় কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে শুনেছি সেটা সাভারের ঘটনা। তাই যা কিছু করতে হয় সাভার থানায় করতে হবে।’
পিডিএস/আরডি