নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৪ জানুয়ারি, ২০২০

ফের বাড়ছে পেঁয়াজসহ চিনি, তেল ও আদার দাম

গত ২০ দিন থেকে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে এলেও আবার বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। একই অবস্থা চিনি, তেল, আদা ও রসুনের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও রামপুরাবাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

রামপুরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে আমদানি করা চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন মৌসুমের দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে চিনির দাম গত সপ্তাহের থেকে ৭ থেকে ৮ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে যে চিনি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা এখন বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আর সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৮ টাকা বেড়েছে। সঙ্গে প্যাকেটজাত চিনির দাম বাড়ানো হয় কেজিপ্রতি ৭ টাকা। এর আগে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত খোলা সয়াবিন তেলের দামও লিটারপ্রতি ৮ টাকা ও পাম সুপার তেলের দাম ১৬ টাকার মতো বেড়েছে। বাজেটের পর এখন পর্যন্ত খোলা চিনির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১২ টাকা।

একই অবস্থা রসুনের বাজারেও। বাজারে ভালোমানের দেশি রসুনের বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। রসুনের মতো এ অঞ্চলের বাজারগুলোতে বেড়েছে আদার দামও। গত সপ্তাহে যে আদার কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা ছিল, এখন দাম বেড়ে সেই আদা বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি।

টিসিবির হিসাবে, বর্তমানে গত বছরের তুলনায় ১৮টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেশি। আর কমেছে সাতটি পণ্যের দাম। যেসব পণ্যের দাম কমেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, চাল, রুই মাছ, ইলিশ, ব্রয়লার মুরগি, লবণ, ডিম ও লবঙ্গের দাম। চালের দাম মানভেদে কমেছে ৪ থেকে ১৮ শতাংশ, রুই ১১, ইলিশ ৬, ব্রয়লার মুরগি ১, লবণ ৫, ডিম ৩ ও লবঙ্গের দাম ৩০ শতাংশ কমেছে। এছাড়া জরুরি পণ্যের মধ্যে যেগুলো দাম বেড়েছে তার মধ্যে রয়েছে— খোলা আটা, ময়দা, খোলা সয়াবিন তেল, পাম তেল, মসুর ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনা মরিচ, হলুদ, আদা, জিরা, গুঁড়ো দুধ, গরুর মাংস, দেশি মুরগি, গরম মসলা, দারুচিনি ও এলাচি।

সবজি বাজারে দেখা যায়, করলা, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, টমেটো ছাড়া সব সবজি বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার নিচে। বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। বরবটি, ঢ্যাঁড়স আর টমেটো বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। তবে কাঁচা টমেটো বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া বাজারে ছোট-মাঝারি মানের ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বড় ভালোমানের ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে। বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, শালগম ৩০ এবং মিষ্টিকুমড়া (ছোট) ৫০ টাকা।

তবে লাউয়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের যে লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। বাজারে ভালোমানের শিম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং নিম্নমানের শিম ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। মুলা ২০ থেকে ২৫ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। নতুন আলু ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গাজর ৪০ টাকা, শসা ৫০, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে কেজিপ্রতি নদীর আইড় ৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০, কোরাল ৪৮০, কাতল ২৭০, রুই ২৮০, বেলে ৫০০, পাবদা ৫৫০, টেংরা ৬০০, চিংড়ি সাইজ ভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০, পুঁটি ২৮০, দেশি টেংরা ৪০০, মেনি ৪০০, নলা ৩৮০, বড় শিং ৪৫০, মাগুর ৫০০, টাকিমাছ ২৮০ এবং এক কেজির শোল ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানি কর্ক মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাজারদর,নিত্যপণ্যের দাম,পেঁয়াজ,সয়াবিন তেল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close