reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ মার্চ, ২০১৮

বিপুল চাহিদা স্বত্ত্বেও পর্যাপ্ত পাট রফতানি সম্ভব হচ্ছে না

বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে বিপুল চাহিদা থাকা স্বত্ত্বেও উৎপাদন ও পণ্য বহুমুখীকরণ স্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও বিশ্ববাজারে এই খাতের রফতানি আয় প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। চলতি ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) পাট এবং পাটজাত পণ্য রফতানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ৬৬ কোটি ১৮ লাখ মার্কিন ডলার- যা এই সময়ের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেশি।একইসঙ্গে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।আর চলতি অর্থবছরের এই সময়ে পাট ও পাট পণ্য রফতানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ কোটি ১২ লাখ ডলার। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুারোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ বর্তমানে আফগানিস্তান, আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বেনিন, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, কানাডা, চিলি, চীন, কংগো, কোস্টারিকা, মিসর, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া, ইথিওপিয়া, গাম্বিয়া, জার্মানি, গোয়েতেমালা, হাইতি, ভারত, আয়ারল্যান্ড, ইরান, জাপান, জর্দান, কোরিয়া, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, মরক্কো, মায়ানমার, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, রাশিয়া, সৌদিআরব, সুদান, দক্ষিণ আফ্রিকা, তাইওয়ান, তাজাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, উগান্ডা, গুয়েতেমালা, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামে পাট ও পাট পণ্য রফতানি করছে।

ইপিবির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে কাঁচাপাট রফতানিতে আয় হয়েছে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, পাট সুতা ও কুন্ডলী রফতানিতে আয় হয়েছে ৪১ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, পাটের বস্তা ও ব্যাগ রফতানি হয়েছে ৯ কোটি ২৫ লাখ ডলারের এবং পাটজাত অন্যান্য পণ্য থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৭ কোটি ৩ লাখ ডলার। পাট ও পাট পণ্য রফতানির বিষয়ে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল হাসান বলেন, বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে বাংলাদেশের পাট ও পাট পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উৎপাদন ও পণ্য বহুমূখীকরণে আমরা এখনও পিছিয়ে থাকায় পর্যাপ্ত পাট ও পাট পণ্য রফতানি করা যাচ্ছে না। তবে সরকার মানসম্মত পাট উৎপাদন ও পণ্য বহুমুখীকরণে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। নীতি সহায়তার পাশাপাশি পণ্য বৈচিত্র্যকরণে নগদ সহায়তা বাড়ানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

বিজেএমসির চেয়ারম্যান বলেন, রফতানিমুখী পাট পণ্য বহুমুখীকরণে নগদ সহায়তা বৃদ্ধি করে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। মানসম্মত পাটজাত পণ্য উৎপাদন হওয়ায় রফতানি কয়েক গুণ বেড়ে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি জানান, ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশের জনগণ প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের প্রতি সচেতন হওয়ায় সেখানে পাট পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। এই চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ নতুন নতুন বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য উৎপাদন করছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে স্বদেশী পাট পণ্যের কার্যকর ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কারণে পাট ও পাট পণ্য রফতানি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বলে তিনি জানান।

ড. মাহমুদুল হাসান জানান, দেশের অভ্যন্তরে পাটের উৎপাদন বাড়াতে মানসম্মত বীজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। যেন কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় পাট চাষে লাভবান হতে পারেন। এতে তারা পাট উৎপাদনে আগ্রহী হবে এবং উৎপাদনও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পণ্য বৈচিত্র্যকরণে সরকারি পাটকলগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব খাতে মোট ২২টি পাটকল চালু রয়েছে এবং বেসরকারিখাতে প্রায় ২০০ পাটকল আছে।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাট রফতানি,বিপুল চাহিদা,ইপিবি,বিজেএমসি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist