মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

পদ্মায় এলো সর্বোচ্চ শক্তির হ্যামার

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শক্তির হ্যামার এখন পদ্মার ঢেউয়ের ওপর ভাসছে। তিন হাজার ৫০০ কিলো জুল শক্তির এটি নিয়ে পদ্মা সেতুর কাজে এলো পাঁচটি হ্যামার। তবে দুটি হ্যামার নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে। পঞ্চম হ্যামারটিসহ এখন পদ্মাপাড়ে সক্রিয় হ্যামার সংখ্যা তিনটি। গতকাল শুক্রবার সকালে পদ্মা সেতু এলাকায় এসে পৌঁছায় জার্মানির (এমইএনসিকে) তৈরি হ্যামারটি।

সেতুর প্রকৌশলীরা জানান, ২৪০০ ও ১৯০০ কিলো জুলের দুটি হ্যামার অনবরত কাজ করছে। তবে দুই ও তিন হাজার কিলোজুলের দুটি হ্যামার রয়েছে নষ্ট অবস্থায়। নতুন আনা হ্যামারে পদ্মা সেতুর মাওয়া ও মাঝ নদীতে পাইল ড্রাইভে গতি আসবে। সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, মূল সেতু গড়তে পাইল নদীর গভীরে নিয়ে যাওয়াই চ্যালেঞ্জ। সেতু প্রকল্প সূত্র জানায়, নদীতে মূল সেতুর ২৪০টি পাইলের মধ্যে ৯৩টি পাইল ড্রাইভ হয়েছে। নদীর দুই পাড়ে সেতুতে ওঠার ট্রানজিশন পিলারে ৩২টি পাইলের মধ্যে ১৬টির কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৭২টি পাইল হবে পদ্মা সেতুতে।

নদীতে যে ২৪০টি পাইল, তার মধ্যে জাজিরা পাড়ের কাছে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারের কাজ শেষ হওয়ার পর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়েছে। এখন ৩৯, ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের কাজ শেষ পর্যায়ে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে আরো ৪১ নম্বর পাইল পর্যন্ত তিনটি স্প্যান বসানো হয়ে গেলে জাজিরা পাড়ে আর কাজ নেই। ৩৪ নম্বর পাইল থেকে ৪১ নম্বর পাইল পর্যন্ত ছয়টি স্প্যান লাগবে। এ অংশ জাজিরা নদীপাড়ের দিকে। পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ২৬টি পিলারের ১৫৬টি পাইলের নকশা (গভীরতা) চূড়ান্ত করা আছে। পুনরায় নকশা প্রক্রিয়াধীন আছে ১৪টি পিলারের ৮৪টি পাইলের। ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যে এসব ডিজাইন পাওয়া যাবে। নদীর পাইল ড্রাইভ কাজে এখন পর্যন্ত এটিই অগ্রগতি। ওপরের তলায় থাকবে চার লেনের মহাসড়ক আর নিচ দিয়ে যাবে রেললাইন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করে সেতু চালুর কথা রয়েছে।

যেভাবে পাইল ও হ্যামার কাজ করে : চায়না মেজর ব্রিজের প্রকৌশলীরা পদ্মার পাইল তলদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া বর্ণনা দিয়ে আরো জানান, ‘স্ট্যাক ইয়ার্ড থেকে পাইল নিয়ে আসার পর প্রথমেই তার ভেতর ও বাইরের অংশ পরিষ্কার করা হয়। এরপর এক হাজার টনের ক্রেনের সাহায্যে তা ওঠানো হয় গাইডিং ফ্রেমে। গাইডিং ফ্রেমের হাইড্রোলিক জ্যাকের সাহায্যে তা ১/৬ অনুপাতে কোণ করে স্টেবল করা হয়। তারপর ক্রেনের সাহায্যে ২৪০০ কিলো জুল ক্ষমতাসম্পন্ন হাইড্রোলিক হ্যামার পাইলের ওপর স্থাপন করা হয়। হ্যামারের ক্ষমতার ১০ শতাংশ লোড (২৪০ কিলো জুল) প্রয়োগ করে প্রথম হ্যামারিং শুরু করা হয় এবং পাইল মাটির ভেতরে প্রবেশ শুরু করলে আরো বেশি লোডের প্রয়োজন হয়। তখন ধীরে ধীরে হ্যামারের লোড বাড়িয়ে দিতে থাকেন প্রকৌশলীরা। এভাবে হ্যামারের লোড ২০ শতাংশ, ৩০ শতাংশ বাড়তে বাড়তে ১০০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়িয়ে পাইল ড্রাইভ করা হয়।

পাইলিংয়ের পর পিলার বানানোর কাজ শেষ হলে তার ওপরে সø্যাব (ছাদ) ও ট্রাস বসানো হবে। এ কাজগুলো শেষ হয়েছে শুধুমাত্র ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে। এ কারণে এ দুটি পিলারের ওপর এখন স্প্যান বসানো রয়েছে।

কাজ এগিয়ে আছে ৩৯ নম্বর পিলারের, ৪০ ও ৪১ নম্বরের কাজও শেষ পর্যায়ে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist