নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৬ জানুয়ারি, ২০২৪

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করুন

- অ্যামনেস্টি

সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ১০ দফা মানবাধিকার সনদ দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এর মধ্যে রয়েছে- মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, প্রতিবাদকে সুরক্ষা দেওয়া, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির অবসান ঘটানো এবং নারীর অধিকার রক্ষা।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি গত বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে এ সনদ প্রকাশ করেছে। এতে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব রাজনৈতিক দলের মূল পরিকল্পনায় মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার অনুযায়ী দেশটির মানবাধিকার রক্ষার বাধ্যবাধকতার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এসব চুক্তির মধ্যে রয়েছে- ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিপিআর), ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যান্ট অন ইকোনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস (আইসিইএসআর)। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লিখিত মানবাধিকার-সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে অ্যামনেস্টি।

সনদে আরো রয়েছে- ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা, মৃত্যুদণ্ড বিলোপ, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ, হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতনের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির অবসান ঘটানো এবং করপোরেট দায়বদ্ধতা ও শ্রম অধিকার সমুন্নত রাখা।

অ্যামনেস্টি প্রতিটি দফার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিদ্যমান পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছে এবং পৃথকভাবে কিছু সুপারিশ করেছে।

মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দফায় সাইবার নিরাপত্তা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অ্যামনেস্টি বলেছে, অভিযুক্ত সবার বিরুদ্ধে মামলা বাতিল করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদ- অনুযায়ী সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন এবং আইনের ২১, ২৫ ও ২৮ ধারা বাতিল করতে হবে। মানহানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জেল-জরিমানার মতো বিধান রদ করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

অ্যামনেস্টি বলেছে, সাংবাদিকদের হয়রানি ও ভয় দেখাতে আইনের অপব্যবহার বন্ধ করুন। নাগরিকদের বিক্ষোভ মোকাবিলার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শক্তির ব্যবহার থামাতে হবে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুরক্ষাসহ তা পালনে সহায়তার বাধ্যবাধকতা পূরণ করুন।

সংস্থাটি বলেছে, সব ধরনের গ্রেপ্তার যাতে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদ- অনুযায়ী করা হয়, তা নিশ্চিত করুন।

এর মধ্যে রয়েছে- গ্রেপ্তারের কারণ ও আটক রাখার স্থান জানানো, গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে অবিলম্বে বিচারকের সামনে হাজির করা ও আইনি পরামর্শ পাওয়া নিশ্চিত করা। মুক্ত ও ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করা।

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান দফায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার রক্ষা করুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা নির্যাতনের অভিযোগ তদন্ত করুন। দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনুন। রোহিঙ্গা শিশুদের যথাসময়ে উপযুক্ত, মানসম্মত ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করুন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close