নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ মার্চ, ২০২০

বাজারে ক্রেতার আকাল, প্রভাব দামে

নভেল করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং নাগরিকদের ঘরে থাকার আহ্বানে ক্রেতা কমেছে ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে, যার প্রভাব পড়েছে সবজির দামে। বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতার অভাবে তাদের বিক্রি কমেছে কয়েক গুণ। পচনশীল এসব পণ্য ধরে রাখা যায় না বলে দামও কমেছে। অবরুদ্ধ এ দশায় বিক্রি কমেছে সুপারশপগুলোতেও। ‘মীনা বাজার’র মগবাজার শাখার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ রাসেল জানালেন, গত দুদিনে তাদের বিক্রি কমে চার ভাগের এক ভাগে নেমেছে। গতকাল শনিবার বিকালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, চলকি মাসের মাঝামাঝিতে মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস-ভীতি ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের বিক্রি বেড়ে গিয়েছিল দুই থেকে তিন গুণ। সপ্তাহখানেক তা চলার পর ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি শুরুর দিন থেকে ক্রেতা কমতে শুরু করে। ‘গতকাল আর আজকে ক্রেতা অনেক কমে গেছে। স্বাভাবিক সময়ে যে বিক্রি হয়, তার চার ভাগের এক ভাগে নেমেছে।’ দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে গিয়ে দেখা যায়, সবজির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা, কিন্তু ক্রেতা নেই। একজন পাইকারি মরিচ বিক্রেতা বলেন, ‘হোটেলগুলা সব বন্ধ। আমাদের পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। এদিকে মানুষজন বাজারে নেই। তাই দাম অনেক কমে গেছে।’ কাঁচামরিচ ২০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন তিনি। ধনেপাতারও একই দাম রাখছিলেন তিনি। যেখানে দুদিন আগেও এসব পণ্য দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে বিক্রি হয়েছে। টমোটে বিক্রেতারা বলছেন, বিক্রি নেমেছে পাঁচ ভাগের এক ভাগে। ‘আগে দিনে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গতকালকে বিক্রি করেছি মাত্র ৫ হাজার টাকা।’ এক কেজি পাকা টমেটো ১০ থেকে ১৪ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম নেমে এসেছে ২৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। বেচাবিক্রি কমে যাওয়ায় মন খারাপ সবজি বিক্রেতা সোহেলের। তিনি বলেন, বেলা দেড়টা পর্যন্ত মাত্র তিন হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছেন। অথচ এই বন্ধের আগের দিনে ২৪ হাজার টাকার মাল কিনে অনেক টাকা বিক্রি করেছি। এই বাজারে করলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। গাজরের কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, পটোল ৩৫ থেকে ৪০, শসা ২৫ থেকে ৩০, মুলা ২০ থেকে ২৫, কচুর লতি ৪০, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ এবং শিম ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ানবাজারে অনেক লাউ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এমন সময়ে ৩০-৪০ টাকার লাউ ১০ টাকায় দিতে চাইছিলেন বিক্রেতা। ছোট আকারের মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকায়। কমেছে আলুর দামও, ৫ কেজির এক পাল্লা আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুনের কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা আর আদা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কেমেছে মুরগি ও মুরগির ডিমের। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। দুদিন আগেও ডিমের ডজন ছিল ১০৫ থেকে ১০৮ টাকা। ফার্মের ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, বন্ধের আগে যা ছিল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ১৮০ টাকা কেজি। মাঝারি আকারের রুই-কাতল মাছ ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, কোরাল মাছ ৬০০ টাকা কেজি এবং বড় রূপচাঁদা মাছ ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close