সংসদ প্রতিবেদক

  ২৯ মে, ২০১৯

বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের ভাস্কর্য থাকছে স্বাধীনতাস্তম্ভে

স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ নির্মাণ করছে সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্য স্থান পাবে স্বাধীনতা স্তম্ভে। পাশাপাশি স্বাধীনতা সংগঠকদেরও ভাস্কর্য করার প্রস্তাব দিতে চায় সংসদীয় কমিটি। স্থানটি এমনভাবে নির্মিত হবে যেন মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ের স্মৃতিতে মানুষে ফিরে যেতে পারে। যেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, সেদিনের চিত্র কেমন ছিল; মুক্তিযুদ্ধে কোথায় কী ঘটেছিল; সব কিছুর প্রতিচ্ছবি এই স্বাধীনতা স্তম্ভে স্থান পাবে।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু পার্কের পেছনেই নির্মিত হচ্ছে এই স্বাধীনতা স্তম্ভ। বাস্তবায়ন করছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদফতরের স্থাপত্য অধিদফতর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এটি অনুমোদন লাভ করে।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা। জাতীয় দিবসে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কার্যক্রম সংগঠিত করা, যা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের চিরস্থায়ী স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং এদেশের জনগণের মাঝে ওই যুদ্ধের মর্মস্পর্শী অনুভূতি পুনরুজ্জীবিত করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতের বর্ণনা এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণকে সংরক্ষণ করা। স্বাধীনতা স্তম্ভের ভূগর্ভস্থ জাদুঘরে বিভিন্ন প্রদর্শনী এক নজরে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতিফল ঘটানো। শহরের মানুষের জন্য মানসিক বিনোদনের সুযোগ প্রদান।

প্রকল্পে যা যা থাকছে ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিংসহ অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ (৫৬০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে)। আন্ডারপাস নির্মাণ (শিশু পার্কের ভেতরে প্যাডেসট্রাইন রো এবং ওয়াটার বডির নিচ দিয়ে যাতায়তের জন্য একটি র‌্যাম্প টাইপ এবং একটি সিঁড়ি টাইপের আন্ডারপাস। শিশু পার্কের অভ্যন্তরে প্রবেশের টিকিট কাউন্টার। শিশু পার্কের সামনের মূল রাস্তা হতে স্বাধীনতা স্তম্ভের গ্লাস টাওয়ারের কেন্দ্র বরাবর শিখা চিরন্তনের উত্তর পাশের রাস্তা পর্যন্ত কিঙ্কার ব্রিক পেভিংয়ের ৪০ ফুট প্রশস্ত পেডিস্ট্রাইন রোড নির্মাণ এবং পেডিস্ট্রাইন রোডের দুই পাশে ৩০ ফুট প্রশস্ত জলাধার নির্মাণ। গ্লাস টাওয়ারের চারদিকে থাকবে গ্রিন হেজ বাউন্ডারি। কার ডেকোরেশন বেসহ ফুলের ৪৪টি আধুনিক দোকান, আধুনিক টয়লেট সুবিধাসহ সাতটি খাবারের দোকান থাকবে। ছবির হাট থাকবে এবং জনসভার জন্য স্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করা হবে।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, আমাদের টার্গেট আছে সময়ের মধ্যেই শেষ করা। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, মাত্র ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ কথা শুনে শাজাহান খান বলেন, ‘তাহলে তো শেষ করতে পারবেন না!’

পরিদর্শনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্য থাকার কথা থাকলেও শুধু মঈনুদ্দিন খান বাদল ছিলেন। অন্যরা উপস্থিত না থাকার কারণ জানতে চাইলে সভাপতি বলেন, সবার থাকার কথা, অনেকে ঢাকার বাইরে আছেন, কেউ ব্যস্ত আছেন। তাই আসতে পারেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close