নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সৌর প্যানেল

নিম্নমানের সৌর প্যানেল ব্যবহার, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, ইনভার্টার সঠিকভাবে কাজ না করা, ব্যাটারি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করা ও নষ্ট ব্যাটারি পরিবর্তন না করার কারণে সৌর প্যানেল নষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এসব ত্রæটির কারণে গ্রাহকের আঙিনায় বসানো ১ লাখ ৪৮ হাজার সৌর প্যানেলের মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি নষ্ট হয়ে গেছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, শর্ত রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য সৌর প্যানেলে বসাতে হবে। কিন্তু একবার সংযোগ পাওয়ার পর ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রকৃতপক্ষে উৎপাদন হচ্ছে কিনাÑ সে বিষয়ে কোনো কড়াকড়ি আরোপ করা হয়নি। মাত্র তিন বছরের মধ্যে প্যানেল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে বিরাট অঙ্কের অর্থেরও অপচয় হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের এক বৈঠকে নতুন করে সৌর প্যানেল ব্যবহারের জন্য মালিকদের উৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, সাধারণত একটি সৌর প্যানেল ২০ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু নিম্নমানের প্যানেল বসানোর কারণে সেগুলো মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, মনিটরিং করে বেশ কয়েকটি কারণ পেয়েছি। এর মধ্যে নিম্নমানের সৌর প্যানেল ব্যবহার সবচেয়ে বড় সমস্যা। গ্রাহকরা অনেক সময় সংযোগ নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে সস্তা-নিম্নমানের প্যানেল কেনেন। এ প্যানেলগুলো কয়েক মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেকে ভালো মানের কিনলেও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। এতে প্যানেল দ্রæত নষ্ট হয়ে যায়।’

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহিদ সারওয়ার বলেন, ‘আমরা গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সময় দিচ্ছি, যেন তারা প্যানেলগুলো ঠিক করেন। পাশাপাশি পরামর্শও দিচ্ছি, যেন ভালো মানের প্যানেল স্থাপন করে।’ পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বলেন, ‘সরকার নবায়ণযোগ্য জ্বালানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে চাচ্ছে। এজন্য আবাসিকের সোলার প্যানেলেরও মনিটরিং করা হচ্ছে। অনেকেই সংযোগের সময় প্যানেল বসালেও এখন আর ব্যবহার করছেন না।’

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১০ সালে দুই কিলোওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে গ্রাহককে সৌর প্যানেল বসাতে মৌখিকভাবে শর্ত দেওয়া হয়। পরে এই মৌখিক শর্তই পালন হচ্ছিল। এরপর ২০১৪ সালে এসে সরকার সৌর প্যানেল বসানোর শর্ত উঠিয়ে নেয়। কিন্তু ২০১৫ সালে আবারও গ্রাহকের ঘাড়ে চাপানো হয় এই শর্ত। এবার এসি ব্যবহার করলে অবশ্যই সৌর প্যানেল বসানোর শর্ত দেওয়া হয়। নষ্ট হওয়া সোলার প্যানেলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নষ্ট হয়েছে ঢাকার দুই বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির। এর মধ্যে ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানির (ডেসকো) অধীন এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের সোলার প্যানেলের মোট সংখ্যা ৬০ হাজার ৫২৬টি। এর মধ্যে নানা কারণে নষ্ট হয়েছে ১২ হাজার ১৪৮টি। এর পরপরই আছে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি)। এই বিতরণ কোম্পানির অধীনে আছে ৯ হাজার ২৬৭টি। এর মধ্যে নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৫৩১টি। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ওজোপাডিকো) প্যানেলের সংখ্যা ১ হাজার ৯৯২টি। এর মধ্যে নষ্ট হয়েছে ৫৬টি। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) অধীনে ৮ হাজার ৫৪০টি সোলার প্যানেল বসানো হয়। এর মধ্যে নষ্ট হয়েছে ৭২৮টি। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বাপবিবো) অধীনে আছে ৫৬ হাজার ৭৯৪টি। এর মধ্যে নষ্ট হয়েছে ৪৭৪টি। নর্দান পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) আছে ১১ হাজার ৪৫০টি। এর মধ্যে নষ্ট হয়েছে ১১০টি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist