সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২৯ মার্চ, ২০২৪

সিরাজগঞ্জ তাঁতকুঞ্জ

ঈদ-নববর্ষ ঘিরে কর্মব্যস্ত তাঁতকুঞ্জ, বেড়েছে চাহিদা

নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে কর্মব্যস্ত হয়ে উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লিগুলো। বর্তমান বাজার ভালো থাকায় দীর্ঘ দিনের নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা করছেন তাঁত মালিকরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর চাহিদা অনেক বেশি বলে জানান তারা। এর আগে সরকার দেশের জেলাগুলো ব্র্যান্ডিংয়ের সময় সিরাজগঞ্জকে তাঁতকুঞ্জ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করে।

জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ তাঁত সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত। সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও চৌহালী উপজেলায় পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম রয়েছে অন্তত ৫ লাখ তাঁত রয়েছে। উল্লেখিত এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার তাঁত কারখানা রয়েছে। এতে প্রায় ২১ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা শাড়ি, লুঙ্গি, ধুতি, গামছা, থ্রিপিস তৈরি করছে। তবে, ৯০ শতাংশ তাঁতে মূলত তৈরি হয় শাড়ি ও লুঙ্গি। এখানে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মানের জামদানী, কাতান, সিল্ক, বেনারশি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, গামছা ও থান কাপড়।

সিরাজগঞ্জ তাঁত বোর্ড সূত্র মতে, তাঁত মালিকদের জন্য খুদ্র ঋণের পাশাপাশি সরকারী সকল সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তাঁত বোর্ড সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আশা এবার সকল মন্দা কাটিয়ে তাঁত মালিকরা লাভবান হবে। জানা গেছে, বছরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার তাঁত পন্য উৎপাদিত হয় এ জেলায়। উৎপাদন হয় প্রায় ৭০ কোটি মিটার কাপড়। তাই জেলার ব্র্যান্ডিং ঘোষণা করা হয় তাঁতশিল্পকে, নাম দেওয়া হয় তাঁতকুঞ্জ সিরাজগঞ্জ।

বেলকুচি উপজেলার তাঁত মালিক শহিদুল ইসলাম, আমজাদ, লাভু, আলামিন, শহীদুজ্জামান জানান, বর্তমান বাজার ভালো থাকায় দীর্ঘ দিনের নানা সমস্যা কাটিয়ে লাভের আশা আছে। আসন্ন নববর্ষ ও ঈদ উপলক্ষে ব্যবসা ভালো হবে বলে মনে করছেন তারা।

তাঁত শ্রমিক শাহআলম, সাহেদ আলী, সোবাহান, সুফিয়া জানান, নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে এখন এখানকার তাঁত মালিকরা কারখানা চালু করেছে। ফলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে।

খামার গ্রামের সফল জাতীয় কারুশিল্পী পদকপ্রাপ্ত তাঁতি আফজাল হোসেন লাভলু বলেন, নববর্ষ ও ঈদ উপলক্ষ্যে এবার ভারতে শতকোটি টাকার সুতি শাড়ি ইতিমধ্যেই রপ্তানি হয়েছে। আমিও কয়েক কোটি টাকা মূল্যের শাড়ি রপ্তানি করেছি।

বেলকুচি হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ারলুম মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বৈদ্যনাথ রায় জানান, সমগ্র বাংলাদেশের মধ্যে তাঁত বস্ত্রের মোট উৎপাদনে ৭০-৭৫ ভাগ সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত হয়। যার মূল্য কয়েকশ কোটি টাকা। গত কয়েক বছর ধরে এই ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। তবুও তাঁত মালিকেরা বিভিন্ন ব্যাংক বা ব্যাক্তি পর্যায়ে ঋণ নিয়ে ঘুড়ে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এ ব্যাপারে সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা না থাকায় তাঁত মালিকেরা নানা সমস্যায় রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close