ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

  ২৮ মার্চ, ২০২৪

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু

মালিক সমিতির তদবিরে চলছে ইটভাটা, নেই কারো ছাড়পত্র

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ইটভাটা মালিক সমিতির তদবিরে চলছে অবৈধ ইটভাটা। ইটভাটাগুলো অবৈধ হওয়ার পরও কীভাবে চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জেলা সচেতন মহলের মধ্যে। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের দিকেও প্রশ্ন উঠছে।

জানা যায়, হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় মোট ১৮টি ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে ৮ নম্বর চাঁদপুর ইউনিয়নে ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে গড়ে উঠেছে ৫টি অবৈধ ইটভাটা। সড়কের পাশে ফসলি জমি ঘেঁষে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হান্নান আলী খাঁর এমএসবি ব্রিকস, বাবুল হোসেন খানের আরএসবি ব্রিকস, আলমগীর হোসেনের আনিশা অ্যান্ড তানিশা বিক্রস, শিতেলী পাড়া হাকিমপুর এলাকায় মিলন অ্যান্ড জান্নাত ব্রিকস, পারমথুরাপুর এলাকায় এ.জে.বি ব্রিকস নামে ইটভাটা রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স। তবু অবৈধ ইটভাটার ব্যবসা চলছে।

সরেজমিনে এম.এস.বি ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, আম, জাম, রেইনট্রি, কদম, কাঁঠাল, খেঁজুর, নারকেলসহ সবুজ বনায়ন ধ্বংস করে শত শত মন বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের কাঠ মজুদ করা হয়েছে। কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে বাঁশের মোথা ও খেজুর গাছসহ অন্যান্য জ্বালানি কাঠ। ফলে চুল্লি থেকে অনবরত বের হচ্ছে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া। এছাড়া ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে স্তূপ করা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও একাধিক বাসিন্দা জানান, খেতের পাশে ইটভাটা গড়ে ওঠায় ধুলোবালিতে ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এছাড়া, ইটভাটার নিজস্ব মাটিভর্তি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাগুলো ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে প্রায়ই ঘটছে নানান দুর্ঘটনা।

এম.এস.বি ইটভাটার পাশে বসবাসরত আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই ইটভাটায় দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা গাছের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। যার কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হচ্ছে চারপাশ। তিনি আরো বলেন, আমার বৃদ্ধ মা শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেছে।

এই সব অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করার দাবি জানান আক্কাস আলী নামের আরেক বাসিন্দা।

জানা যায়, বছরে দু-একবার পরিবেশ অধিদপ্তর নামমাত্র অভিযান চালিয়ে সামান্য কিছু জরিমানা করলেও সেগুলো পরবর্তীতে আবার চালু হয়ে যায়। আর হরিণাকুণ্ডুতে যতগুলো অবৈধ ইটভাটা রয়েছে সবই বিভিন্নভাবে তদবির করে অনৈতিক উপায়ে পরিচালনা করছে ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হান্নান আলী খাঁ।

হান্নান আলী খাঁ বলেন, শুধু ঝিনাইদহে নয়, সারা দেশেই অবৈধ উপায়ে ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। আপনারা পারলে ইটভাটা বন্ধ করে দেন।

অবৈধ ইটভাটা পরিচালনার বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুন্তাছির রহমান বলেন, হরিণাকুণ্ডুতে ১৮টি ইটভাটা রয়েছে যাদের কারোরই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এ পর্যন্ত ৮টি ভাটায় ২১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close