বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩

বাবুগঞ্জে আত্মহত্যার প্রবণতা

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা। বাবুগঞ্জে গত এক মাসে চারটি আত্মহত্যার ঘটনা উপজেলা জুড়ে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে এক ইউনিয়নে ঘটেছে তিনটি। আবার কেউ কেউ চালিয়েছেন আত্মহত্যার ব্যর্থ চেষ্টা। প্রেমে ব্যর্থতা, পারিবারিক কলহসহ বিভিন্ন কারণে অনেকেই আত্মহত্যাই মুক্তির একমাত্র পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছে। হঠাৎ করে এমন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়াকে উদ্বেগজনক বলছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, ১৯ ডিসেম্বর রহমতপুর ইউনিয়নের আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন ভাড়া বাসা থেকে নাবিলা আক্তার মিতু (২২) নামে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক অশান্তির কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে বলে প্রথমিকভাবে জানা গেছে। ২২ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রিপা আক্তার (১৯) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিহতের বোন নিতু বলেন, রিপার সঙ্গে গত সাড়ে তিন বছর ধরে প্রতিবেশী আসমা বেগমের ছেলে আফজালের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল, যা আফজালের মা এবং মামারা মেনে নিতে পারছিলেন না। ওই ঘটনায় বাবুগঞ্জ থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনায় দুজনকে আসামি করে একটি মামালা দায়ের করা হয়।

১০ জানুয়ারি বিকালে উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে লামিয়া আক্তার (১৬) নামে এক এসএসসি পরিক্ষার্থী কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন। সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী কেয়া আক্তার রত্না (২২) তার প্রেমিক অন্তর আলীকে ভিডিও ফোনে রেখেই গলায় ফাঁস দেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একই সেমিস্টারের অন্তর আলীকে (২২) আসামি করে রত্নার বাবা মো. বশির এয়ারপোর্ট থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় প্রেমিক অন্তর আলী জেলহাজতে রয়েছেন।

বাবুগঞ্জ উপজেলার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ মুন্না বলেন, আত্মহত্যা অন্যতম সামাজিক ব্যাধি। হতাশা, পারিবারিক কলহ ও মাদকের আগ্রাসন কারণে আত্মহত্যা বাড়ছে। তথ্য প্রযুক্তির সঠিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আত্মহত্যার প্রবণতা রোধ করে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, বাবুগঞ্জে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া আত্মহত্যাগুলো বেশিরভাগই প্রেম ঘটিত। মোবাইল ফোনের অপব্যবহার, ধর্মীয় অনুশাসনের অভাব ও অভিভাবকদের কথা মেনে না চলায় আত্মহত্যার প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ছেলে মেয়েরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রথমে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে। এছাড়া ধর্মীয় অনুশাসন ও বিধিনিষেধ মেনে চললে আত্মহননের মত ব্যাধি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close