লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

শিক্ষকদের ফেরত চেয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় বদলি হওয়া দুই শিক্ষককে ফেরতের দাবিতে ক্লাশ বর্জন করেছে কিসামত চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার সকালে দ্বিতীয় দিনের বিদ্যালয়ের ক্লাশ বর্জন করে বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার থেকে শিক্ষকদের ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন ঘোষণা দেন উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ম্যানেজিং কমিটি। তাদের অভিযোগ, ‘অনৈতিকভাবে’ ওই দুই শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয়টিতে মোট ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য ৮ জন শিক্ষক রয়েছেন। এরই মধ্যে গত বুধবার হঠাৎ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মোসলেহা বেগমকে মহিষখোচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষক সেলিনা বেগমকে কুমড়িরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাময়িক পাঠদানের অনুমতি প্রদান করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। কিন্তু কিসামত-চন্দ্রপুর বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটে পড়াশুনা বিঘœ ঘটছে। এতে অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা জরুরিভাবে গত বুধবার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিদ্যালয়টির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেবেকা আক্তার, ৪র্থ শ্রেণির আর্জিনা, আরফিনা ও পরিমল জানায়, তাদের গণিত ও প্রাক প্রাথমিকের দুই শিক্ষককে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত তাদের ক্লাশ বর্জন চলবে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, সাম্প্রতিক সময় উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হিসেবে চলতি দায়িত্ব নিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। শূন্যপদ পুরনের নামে বদলি বাণিজ্যে করছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এন এম শরীফুল ইসলাম।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান জানান, অফিস আদেশ ছাড়াই দুই শিক্ষককে অন্যত্র পঠিয়ে দেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বদিয়ার রহমান জানান, শিক্ষককে বদলি বা ডেপুটিশনে দেয়ার ক্ষমতা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নেই।

আদিতমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে জানান, চলতি দায়িত্বের কারনে বেশ কিছু পদ শুন্য হয়। তাই শিক্ষকদের চাহিদা অনুযায়ী (যার যে বিদ্যালয়ে পছন্দ) সাময়িক পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ অনুমতি দেয়ার সাংবিধানিক ক্ষমতা না থাকলেও শিক্ষকদের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে এটা করা হয়েছে। যা সাময়িক, স্থায়ী নয়। তাই এটার কোন অফিস আদেশও নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন জানান, প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষককে অন্যত্র পাঠদানের অনুমতি দেয়া ঠিক করেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসাদুজ্জামান জানান, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close